অজুহাত ।। সোলায়মান শিপন

- Advertisement -
- Advertisement -

১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ….
তূর্য স্ত্রী শর্মীকে নিয়ে রিক্সায় করে বাড়ি ফিরছে। এসময় রিক্সা পাওয়াটা দুস্কর হয়ে গেছে। সহজে রিক্সা পাওয়া যাচ্ছে না। দেশ নিয়ে নানান গুজব নানান উৎস থেকে পাওয়া যাচ্ছে। কেউ স্বাধিকরের পক্ষে কথা বলছে। কেউ কেউ অবশ্য বলছে, হিন্দুদের ষড়যন্ত্র। পাকিস্তান ভাগ করতে চায়। ভাই ভাইয়ে দ্বন্দ্ব লাগিয়ে হিন্দুস্থান শোধ নিচ্ছে। ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের শোধ। কেউ বলছে, ভারত সুযোগ পেয়েছে। সুযোগের যথাযথ ব্যবহার তারা করছে। বঙ্গবন্ধু কারো কাছে প্রাণের নেতা। স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা। পূর্ব বাংলার মানুষকে নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে। স্বাধীনতার স্বপ্ন। তিতুমীর স্বপ্ন দেখিয়েছিল। স্বপ্ন পূরণ করতে পারেনি। এবারের কথা ভিন্ন। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন মানুষকে দেখিয়েছে, তা সে পূরণ করতে পারবে। কেউ অবশ্য বলছে- শেখ মুজিব দেশদ্রোহী, দুস্কৃতিকারী। অতি সত্ত্বর পাকিস্তান সরকার তাকে শক্ত হাতে দমন করবে। এই ব্যটাকে কীভাবে শায়েস্তা করতে হয় পাকিস্তান সরকার তা ভালো করেই জানে।

পরাজয়ের পক্ষে কখনো ইতিহাস লেখা হয় না। শেষ পর্যন্ত ইতিহাস কীভাবে লেখা হবে সবাই তা দেখার অপেক্ষায়। পায়ে হেঁটে কোথাও যাওয়াটা নিরাপদ নয়। রিক্সায় কোথাও যাওয়া নিরাপদ, তাও অবশ্য নয়। সবচেয়ে ভালো হয় বাড়ি থেকে বের না হলে। শর্মীর মত এখনো যারা বোরকা পরা অভ্যাস করেনি তাদের জন্য পরিবেশ মোটেও সুবিধাজনক নয়। বোরকা ছাড়া যুবতী মেয়ে আর অন্ধগলির রঙ্গিলা মেয়েদের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য করা হচ্ছে না। ইসলামী ছাত্রসংঘের ছেলেরা সারাদেশে অলিতে গলিতে ছড়িয়ে আছে। কেউ নোংরা কাপড় ধরে ঘুরে বেড়ায়, কেউ নোংরা চিন্তা পরে ঘুরে বেড়ায়। এ দু’য়ের মধ্যে পার্থক্য একটাই। মানুষের নোংরা কাপড় দেখা যায়। নোংরা চিন্তাগুলো আড়ালেই থেকে যায়, নোংরা সুযোগের অপেক্ষায়।

শর্মী নোংরা কাপড় পরে বাড়ি থেকে বেড়িয়েছে, সেটা অবশ্য বলা যায় না। তবে ইসলামী ছাত্রসংঘের কাছে এটা অশালীন পোশাক। আর অশালীন পোশাক পরে বাইরে বের হওয়াটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। ইসলাম রক্ষার প্রশ্ন যেখানে, সেখানে কোনো আপোস নেই। বঙ্গবন্ধুকে ক্ষমতা দেয়নি পূর্ব পাকিস্তান সরকার। সেই সুবাদে জামায়েতী ইসলাম ক্ষমতায়, এ কথা বলা যায়। ক্ষমতায় থাকতেও যদি তারা ইসলামী সংস্কৃতি রক্ষা করতে না পারে তাহলে আর কবে? উপর থেকে নির্দেশ আছে যেকোনো মূল্যে হিন্দু সংস্কৃতিমুক্ত পাকিস্তান গড়তে হবে। আর এর জন্য তরুণ শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। পূর্ব পাকিস্তান হবে হিন্দুমুক্ত একটি দেশ। ইতোমধ্যে পহেলা বৈশাখ ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে কাজী নজরুল ইসলাম হিন্দু মেয়ে বিয়ে করে যে অপরাধ করেছে, তা অবশ্য ক্ষমা করা হয়েছে। তাকে এখনো নিষিদ্ধ করা হয়নি। হয়তো অনেকগুলো ইসলামী গান রচনার কারনেই এখনো টিকে আছেন তিনি। তবে ভবিষ্যতে তাকে নিষিদ্ধ করা হবেনা এমনটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা, কেননা ইসলামী গানের পাশাপাশি হিন্দু ধর্মের অনেকগুলো ভক্তিমূলক গানও তিনি রচনা করেছেন। সাম্যবাদের ভয়ানক অভিযোগ তার বিরুদ্ধেও আছে। অনেক ভালো ভাবেই আছে।

মহল্লার গলিতে ঢোকার মাথায় রিক্সাটি বাঁধা পেল। তিনজনের একটি ছোট্ট দল রিক্সাটির সামনে এসে দাড়াল। তিনজনের একজন রিক্সাচালককে কষে একটি চড় মারল। চড়টি কেন মারল সেটি অবশ্য বোঝা গেল না। হাতের ইশারা পাবার সাথে সাথেই চালক বেচারা রিক্সা থামিয়েছিল। তাহলে তাকে এভাবে চড় মারার কারন কী? তূর্য নির্বিকারভাবে বসে থাকলেও শর্মী প্রতিবাদ জানাল। প্রতিবাদী সুরে শর্মী বলল, কী ব্যাপার? আপনারা শুধু শুধু লোকটিকে এভাবে মারলেন কেন? আপনাদের সমস্যা কী? শর্মীর প্রশ্নের জবাব পাওয়া গেল না।

উপরন্তু আরেকজন এসে রিক্সাচালকের গালে আরেকটি চড় বসিয়ে দিল আর বলল, হালায় মালাউন। মুসলমান হইয়া টুপি মাথায় দেয় না। মালাউন হইতে চাও? দলটির আরেকজন বলে উঠল, আবে হালায় মুসলমান কিনা এইডাইতো বোঝা যায় না। হালার মুখে তো দাড়ি নাই। হালার লুঙ্গি খুইলা দেহন লাগে মুসলমান কিনা? কিরে, খুলমু নাকি লুঙ্গি মাইয়া মাইনসের সামনে? কথাটা বলতে বলতে তিনজনই শব্দ করে হাঁসতে লাগল।

হঠাৎ করেই দলটির হাঁসি থেমে গেল। এরপর আরো কয়েকটা কুৎসিত গালি। টপাটপ আরো কয়েকটা চড়। রিক্সাওয়ালা এবার ধপাস করে মাটিতে পড়ে গেল। অসহায় দৃষ্টি নিয়ে সে তূর্যের দিকে তাকালো। তূর্য কিছুই বলতে পারল না। শুধু পরের নোংরা দৃশ্যগুলোর জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। দলটির নেতা এবার শর্মীর দিকে এগিয়ে এল। নাক দিয়ে শর্মীর শরীরের গন্ধ নিতে লাগল। শর্মীর বক্ষদেশ থেকে তার কপাল পর্যন্ত শুকল। এবার তূর্য প্রতিবাদ করল। দলনেতা দেলোয়ারের গালে একটা চড় বসিয়ে দিল। চড়টি বসানোর সঙ্গে সঙ্গে দলের অন্য দুইজন তূর্যকে টান দিয়ে রিক্সা থেকে নামিয়ে সহস্র কিল ঘুসিতে তার সমস্ত দেহ রক্তাক্ত করে দিল। কিল ঘুসির একপর্যায়ে তূর্যও রিক্সাওয়ালার সামনে হুমড়ি খেয়ে পড়ল। তার শরীরের শক্তি ধীরে ধীরে কমে এল। এদিকে দলনেতা শর্মীর বুক থেকে ওড়নাটা কেড়ে নিল। সাথে সাথে অন্য দুইজন সঙ্গিও দেলোয়ারের সাথে সামিল হলো। তারা শর্মীর দুই গাল তাদের মাংশল হাত দিয়ে দলাই মালাই করতে লাগল।

হাজী এখলাস উদ্দীন সাহেব রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ দেলেয়ারের দৃষ্টি পড়ল তার উপর। সাথে সাথে তারা সেখান থেকে সড়ে পড়ল। শুধু যাবার আগে শর্মীর কানের সামনে মুখ নিয়ে কিছু একটা বিরবির করে বলল। শর্মী ফুপিয়ে কেঁদে উঠল। তার গাল বেয়ে যেন লাল রংয়ের অশ্রু ঝড়ছে। পরাধীন সূর্যের আলো তার গালে এসে পড়েছে। এতে তার অশ্রু যেন আরো গাঢ় লালে পরিণত হয়েছে। দূর থেকে চোখের জল রক্তের মত লাগছে। অনেকটা সময় কেটে গেছে। দেশ স্বাধীন হয়েছে। মানুষ স্বাধীন হয়েছে কিনা তা নিয়ে তর্ক হচ্ছে। বিবেক ও বাক-স্বাধীনতার মধ্যে তর্ক। বিবেক বলছে, মানুষ স্বাধীন হয়েছে। মানুষ তার বিবেকের কাছে বন্দি। তবে, এ বন্দি দশা স্বাধীনতার আরেক নাম। বাক-স্বাধীনতা বিবেকের দ্বিতীয় কথাটি মেনে নিলেও প্রথম কথাটি মানতে পারছে না। মানুষের স্বাধীনতা, এটা কি আদৌ সম্ভব? আমার তো মনে হয় আমি নিজেই পরাধীন। আমি কি স্বাধীন? আমাকে গ্রহণ করার অপরাধে মানুষ কি জীবন দিচ্ছে না? বিবেক এবার ভাবনায় পরে গেল। বাক-স্বাধীনতা ঠিকই বলছে।

প্রত্যেকের মজ্জ্বায় তার বসবাস। তবে, এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও তাকে অনেকের মধ্যে মৃতের মত পরে থাকতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সে কি তার শৌর্য্য-বীর্য নিয়ে জেগে উঠতে পেরেছে? কখনও সে জেগে উঠেছে, আর তখনই কোনো ভয়ানক দৈত্য তাকে যেন গিলে, খেতে চেয়েছে। তবে তাকে রক্ষা করার কথাতো দেশ স্বাধীন হবার পর থেকেই স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে চর্চা হয়ে আসছে। সবাই তাকে রক্ষা করার ট্রেইনিং নিয়ে বসে আছে। কেউ বাঁচাতে আসছে না।

৩০ মার্চ, ১৯৭১
বাড়ির উঠানে তূর্যের লাশ পরে আছে। কিছুক্ষণ আগেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। কয়েক’শ বুট জুতার শব্দে একটু আগেও বাড়িটির মধ্যে হৈ হৈ অবস্থা ছিল। প্রায় আধ ঘন্টা যাবৎ বাড়িটিতে এক ধরনের নীরবতা বিরাজ করছে। কিছুক্ষণ আগেও ঘর থেকে শর্মীর গোঙ্গানীর শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল। এখন আর তা পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু বুটের পালাবদলের শব্দে বঙ্গ জননী লজ্জ্বায় ভাসছে। এতক্ষণে আট থেকে দশজন হায়নার থাবা সহ্য করেছে মেয়েটি। এতক্ষণে তার দেহের সমস্ত শক্তি বের করে নিয়েছে হায়নার দল।

দেলোয়ার তার দল নিয়ে বসে আছে। মিলিটারীর দলটিকে সে-ই নিয়ে এসেছে। তার ও তার দলের সবার মুখে এক ধরনের চাপা হাঁসি। এ হাঁসির অর্থ বোঝা যায়। অনেকদিনের কামনা চরিতার্থ করার অপেক্ষায় বসে আছে তারা! রানী তার স্বামী মাহফুজকে নিয়ে রিক্সায় করে ঘুরতে বের হয়েছে। আজ পহেলা বৈশাখ। ২০০১ সালের এই দিনে রানী তার বাবাকে হারিয়েছিল। রমনার বটমূলের সেই দিনের গানের অনুষ্ঠানে যে গ্রেনেড হামলা চালানো হয় তা শুধু তার বাবাকেই কেড়ে নিয়েছিল। অক্ষত অবস্থাতেই রানী বাড়ি ফিরেছিল সেদিন। বাবার সাথে আর কোনোদিন পান্তা ইলিশ খাবে না- এমন এক প্রতিজ্ঞা যেন করে বসতে হলো তাকে। এমন এক প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রকৃতি সেদিন তাকে জীবন দান করেছিল। রানী যথারীতি তার প্রতিশ্রুতি পালন করে আসছে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে।

সেদিন অবশ্য প্রতিশ্রুতি দেওয়া ছাড়া কোনো উপায়ই তার ছিল না। পহেলা বৈশাখ এলেই তার বুকের ভেতরটা কেমন যেন করতে থাকে। তখন রানী বাসন্তী রংয়ের শাড়ী পরে বেরিয়ে পরে মাহফুজের সাথে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশ থেকে শুরু করে টিএসসি মোড় ও শাহবাগের নানান জাগায় ঘুরে বেড়ায় সে। একটা ভুল সে কখনই করে না। আর সেটি হলো- রমনার বটমূলে প্রবেশ করা।আজও রানী বাসন্তী রংয়ের শাড়ী পড়েছে। শুধু খোঁপায় রঙ্গিন ফুল নেই। সেদিনের ভয়ানক পরিস্থিতিকে ভুলে থাকতে অন্তত এই দিনটাতে সে খোঁপায় ফুল দেয় না। সেদিন তার ছোট্ট ছোট্ট চুলে ফুল ছিল। রঙ্গিন ফুল।

সারা শহর ফুলে ফুলে সেঁজেছে। শুধু রানীর খোপায় ফুল নেই। টিএসসি এলাকায় ঢোকার আগেই মাহফুজকে রিক্সা ছেড়ে দিতে হলো। এ যে-বাঙ্গালীর মিলন মেলা। তাদের প্রাণের উৎসব। বাকীটা পথ হেঁটে না গিয়ে উপায় নেই। রাস্তার দুই ধারে বৈশাখী মেলা বসেছে। বাঁশের বাঁশি থেকে শুরু করে বাঙ্গালির সকল ঐতিহ্য যেন একসাথে দেখা যাচ্ছে। মাহফুজ রানীর হাত ধরে হাঁটছে। ভীড়ের মধ্যে হারিয়ে যাওয়াটা অসম্ভব কিছু নয়।

হঠাৎ রানীর দৃষ্টি পড়ল হাওয়াই মিঠাইর দিকে। ছোটবেলায় বাবা অফিস থেকে ফেরার পথে সাথে করে নিয়ে আসতেন। রানী মাহফুজের কাছে হাওয়াই মিঠাই খেতে চাইল। রানীকে মাহফুজ ভীড়বিহীন একটি জায়গায় রেখে হাওয়াই মিঠাই আনতে চলে গেল। মাহফুজের চলে যাবার সাথে সাথেই সাত থেকে আটজনের একটি দল এসে রানীকে ঘিরে ফেলল। তারা রানীর সাথে কথা বলতে চাওয়ায় সে তাদেরকে অবজ্ঞাসূচক কিছু বলল। রানীর কথায় দলটির নেতা অনেকটা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল। তারা রানীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় স্পর্শ করতে শুরু করল। ঠিক তখনই মাহফুজ ফিরে এল। তীব্র প্রতিবাদী কন্ঠে সে মাহফুজকে বীচ বলে গালি দিল। সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটি থাপ্পরও বসিয়ে দিল। মাহফুজের থাপ্পরের জবাবে দলটি আরও কুৎসিত ও নোংরা আচরণ শুরু করে দিল।

দলটির কয়েকজন মাহফুজকে এলোপাথারী ঘুসি ও লাথি মারতে লাগল। দুইজন রানীর গাল চাপতে লাগল। রানী প্রতিবাদ করল। সেও দলটিকে উদ্দেশ্য করে কয়েকটি গালি দিল। গালিতে দলটির ভয়ংকর ও কুৎসিত মনেচ্ছা এত স্পষ্ট হবে তা রানী বুঝে উঠেনি। কিছু বুঝে উঠার আগেই মানুষের দলটি হায়নার দলে রূপ নিল।

মুহুর্তের মধ্যে তারা রানীর কাপড় খুলে ফেলল। কিছুক্ষণের মধ্যে দলটিকে ভারী করে আরো কয়েকজন উম্মাদ এসে যোগ দিল। তারা যে কতটা উম্মাদ ছিল, তা রানীর আর্তনাদে স্পষ্ট হয়ে উঠল। স্বাধীন বাংলার আকাশ বাতাস সব বুঝলেও নীরব ভূমিকাই পালন করছিল। হয়তো সেখানে সেদিন কোনো মানব সন্তান ছিলনা। সেদিন হয়ত এ জাতি তাদের প্রতিবাদী সত্ত্বাকে হারিয়ে ফেলেছিল। বিবেকও সেদিন কোনো প্রশ্ন করার সাহস করেনি। এই দেশে জনসংখ্যা বাড়ে। মানুষ কেন বাড়েনা? তাহলে কি সেদিন সবাই মানবতাকে ভুলে গিয়ে পশুত্বকে বরণ করে নিয়েছিল?
না। বাকস্বাধীনতা সেদিন পুরোপুরি লজ্জ্বায় ভাসেনি। বাকস্বাধীনতা যাদের জিহ্বায়, যাদের তারুণ্যে, যাদের প্রতিবাদে বেঁচে আছে- এমনি কিছু প্রতিবাদী যুবক সেদিন এগিয়ে এসেছিল। কিছু মানুষের বিবেক তখনও কথা বলছিল। একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের সভাপতি বদিউজ্জামান তার পাঞ্জাবী রানীকে পড়িয়ে দিল। বদিউজ্জামানের দলটি উগ্রবাদী দলটির উপর হামলা চালাল। বদিউজ্জামানের হাত ভাঙ্গল। তবে উগ্রবাদী দলটি নাস্তানুবাদ হলো। দলনেতা সহ কয়েকজনকে পুলিশ অ্যারেষ্ট করে নিয়ে গেল।

১৫ এপ্রিল, ২০১৫
দলটির নেতার পরিচয় পাওয়া গেছে। ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত সে। আইন তাকে বেশিক্ষণ আটকে রাখতে পারেনি। উপর মহলের চাপে তাকে ছেড়ে দিতে হয়েছে। ফেইসবুক, টুইটারে একটি শ্রেণি রানীকেই দোষী করছে। যেই মেয়ে বোরকা পরে না, তাকে নাকি ধর্ষণ করাও জায়েজ। কেউ কেউ বলছে, বোরকা না পরার অপরাধ নাকি ধর্ষণের চাইতে অনেক বড় অপরাধ।

পাকিস্তান এ দেশে শিকড় গাড়তে পারেনি। তবে পাকিস্তানী ইসলাম এদেশে ঠিকই শিকড় গেড়ে বসেছে। কিছু নব্য রাজাকার, কিছু পাকিস্তানী অমবহঃ এখনো এ দেশে পাকিস্তানী ইসলাম কায়েম করতে চায়। তবে, জাতি এখনো পুরো লজ্জ্বায় ভাসেনি। এখনো দেশে কিছু মানুষ আছে। এরা রানীর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। সরকার তীব্র প্রতিবাদের মুখে দিশেহারা। শোনা যাচ্ছে যাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তাদেরকে যথাশীঘ্রই গ্রেপ্তার করা হবে। যদিও পুলিশ সুপার বলছেন- সেদিন নাকি এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

- Advertisement -

আরো পড়ুুর