রমেশ আর শর্মিলার দুই সন্তানসহ ছোট পরিবার নিয়ে গ্রামে বাস করে। রমেশ নদীতে মাছ ধরে সংসার চালায়। একদিন মাছ ধরতে যাওয়ার আগে রমেশ বলে।
…কৈগো শর্মিলা কিছু খওয়ার আছে আমি কালনী নদীতে যাইবো।
….নাগো কাল যে চাল ডাল আনছো রাতে খাওয়ার পর কিছু পান্তা ছিলো, নমিতা আর অমিত খাইয়া ইস্কুলে গেছে। অমি সকালে আইল থেকে কিছু কলমি আর বইট্টা শাক কুড়াইয়া আনছি, দেখ কিছু চালের ব্যবস্থা হয় কিনা।
…কি আর করি নমিতার মা আজকাল আর কালনী নদীতে অনেক কষ্ট করেও আগের মত মাছ জালে ধরা পড়েনা। হাটের আবস্থাও খারাপ। মাছ কেনার লোকই পাওয়া যায় না। এই ছোট মাছ কেও কিনতে চায় না, সবাই শুধু সস্তায় পাংগাস আর ফরমালিন দেওয়া বিদেশী রুই কিনে। আচ্ছা ঠিক আছে আমি যাই।
…একটু খারাও কাইলের একটা রুটি আছে মুখে দিয়া যাও, আমি না হয় পানি খাইয়া উদর ভরি।
…আনো দুজনেই ভাগ করে খাই। রুটি খাওয়ার পর রমেশ শর্মিলাকে জরিয়ে ধরে কপালে একটু চুমু দিয়া বলে, কতো কষ্ট তোমারে দিতাছি তাইনা লক্ষী বউ?
শর্মিলা বলে না না তোমার কি দোষ। সবইতো আমার ভাগ্য। নদীতে নাইতে গিয়ে তোমার মত সুঠামদেহী কর্মঠ রমেশকে তো আমিই ভালোবেসে বিয়া করছিলাম। বিয়ার পর আজ পর্যন্ত তুমি আমাকে কম ভালবাসা দেওনি, প্রায়ই মাছ বেচে তুমি আমার জন্য আলতা আর চুড়ি আনতে, আমি যে কী খুশি হইতাম তোমারে বুঝিতে দেইনি।
কথাগুলি বলতে বলতে শর্মিলা আবার ও রমেশকে জড়িয়ে ধরে কতক্ষন চুপ থাকে আর রমেশ শর্মিলার মাথায় আর পিঠে হাত বুলায়।