মিঠু সঞ্জয় : সারাদেশ যখন লকডাউন ঠিক তখনই পাকা ধান কেটে দেশের মানুষের খাদ্য সরবরাহ ঠিক রাখতে এবার কৃষকদের পাশে দাঁড়ালো আনসার-ভিডিপির সদস্যবৃন্দ। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবজনিত কারণে সুনামগঞ্জসহ হাওড় অধ্যুষিত অঞ্চলে ধান কাটার শ্রমিক সংকট চরম রূপ ধারণ করে। হাওর অঞ্চলে বছরে একবারই ফসল হয়, তা কাটার জন্য রংপুর, গাইবান্ধা, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নাটোরসহ বেশ কয়েকটি জেলা থেকে অনেক ধান কাটা শ্রমিক আসে, ধান কাটার মৌসুমের এক মাস আগেই কৃষকদের সাথে তাদের চুক্তি হয়। কিন্তু লকডাউনের কারণে শ্রমিকরা আসতে না পারায় কৃষকরা পাকাধান নিয়ে বিপদে পড়ে যায়। এমতাবস্থায় কৃষকদের পাকাধান কাটায় এগিয়ে আসে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী। সিলেট রেঞ্জের কমান্ড্যান্ট রফিকুল ইসলামের নির্দেশে জেলা কমান্ড্যান্টের তত্বাবধান ও উপজেলা আনসার-ভিডিপি অফিসারদের নেতৃত্বে এ কর্মযজ্ঞ চলছে। সুনামগঞ্জ জেলার হাওড় অধ্যুষিত জামালগঞ্জ, শাল্লা, ধর্মপাশা, বিশ্বম্ভপুর, দুয়ারা ও জগন্নাথপুরের কৃষকদের ধান কেটে দিচ্ছে আনসার ও ভিডিপির সদস্যরা। উল্লেখ্য যে, প্রতেকটি গ্রামে এক প্লাটুন স্বেচ্ছাসেবী ভিডিপি সদস্য রয়েছে।
জামালগঞ্জের উপজেলা আনসার ও ভিডিপি অফিসার ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী সাপ্তাহিক অন্যধারাকে জানান, তার উপজেলার ২৫০ জন ভিডিপি সদস্য কৃষকদের ধান কেটে দিচ্ছে। আজ তারা ২৫০ জন ভিডিপি সদস্য তার উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের হালির হাওরে ধান কেটেছে। এজন্য তারা কৃষকদের কাছ থেকে কোনো পারিশ্রমিক নিচ্ছে না, তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করা হয়।
সিলেট বিভাগের রেঞ্জ কমান্ড্যান্ট রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সাপ্তাহিক অন্যধারাকে বলেন, আনসাররা বেতনভুক্ত এবং নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় নিয়োজিত থাকলেও ভিডিপি সদস্যদের কোনো পারিশ্রমিক নেই, আপদকালীন সময়ে তারা মানব নিরাপত্তায় অংশগ্রহণ করে, যার অন্যতম ফুড সিকিউরিটি। ফুড সিকিউরিটি নিশ্চিত করার জন্য সিভিল প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের সহায়তা পেলে শুধুমাত্র ভিডিপি সদস্যদের মাধ্যমেই সম্পূর্ণ হাওড়ের ধান কাটা সম্ভব। ধান কাটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিজেরাই সম্পূর্ণ ধান বিনা পারিশ্রমিকে কৃষকের ধান কেটে দেবে জানান ভিডিপি সদস্যবৃন্দ ।
সাপ্তাহিক অন্যধারা/২১ এপ্রিল-২০২০/জেডএন