কারিকুলাম বা শিক্ষাক্রম কি

- Advertisement -
- Advertisement -

অন্যধারা ডেস্ক : ইংরেজি শব্দ কারিকুলাম এর বাংলা পরিভাষা শিক্ষাক্রম, পাঠ্যক্রম, পাঠক্রম ইত্যাদি। তবে বাংলাদেশে কারিকুলাম শব্দের প্রতিশব্দ হিসেবে শিক্ষাক্রম ব্যবহার করা হয়েছে। আভিধানিক অর্থে শিক্ষাক্রম বোঝায় । কারিকুলাম কথাটি ল্যাটিন শব্দ Currere থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ হল দৌড়ানো বা ঘোড়দৌড়ের নির্দিষ্ট পথ। আভিধানিক অর্থে শিক্ষাক্রম বলতে বোঝায়, নির্দিষ্ট লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার জন্য একটি কোর্স।

শিক্ষক , শিক্ষক হতে আগ্রহী, অভিভাবক সকলে অবশ্যই জানা উচিত এই কারিকুলাম বা শিক্ষাক্রম সম্পর্কে। কারন শিখন ও শিক্ষণের প্রধান হাতিয়ারই হচ্ছে এই কারিকুলাম। কারিকুলাম বা শিক্ষাক্রম কেন এত গুরুত্বপূর্ণ তা জানার জন্য আমাদেরকে যেতে হবে শিক্ষাক্রমের সংজ্ঞায়।

যা বাস্তবায়নের জন্য বিদ্যালয় কর্তৃক পরিকল্পিত ও পরিচালিত যাবতীয় শিখন-শেখানো কার্যাবলি যা বিদ্যালয়ের ভিতরে বা বাইরে দলগত বা এককভাবে সম্পন্ন করা হয়, তাকে কারিকুলাম বলে। অর্থাৎ একটি বিষয় পড়লে শিক্ষার্থীর মধ্যে কি কি দক্ষতা ও যোগ্যতা আসবে ইত্যাদি বিষয়ের বিস্তারিত হল কারিকুলাম বা শিক্ষাক্রম।

একটি নির্দিষ্ট বয়স ও শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা কী জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী হবে- তার সামগ্রিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন কৌশল হচ্ছে শিক্ষাক্রম বা কারিকুলাম। কারিকুলাম হচ্ছে সমগ্র শিক্ষা কার্যক্রমের রূপরেখা। কারিকুলামের লক্ষ্য জাতীয় দর্শন, রাষ্ট্রীয় নীতি, জাতীয় ও বৈশ্বিক পরিবেশ এবং চাহিদা ও উপকারভোগী জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনীয়তার আলোকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় প্রণীত হয়। এর লক্ষ্য থাকে অনেক ব্যাপক।  এ সব লক্ষ্য অর্জন করার জন্য অনেকগুলো সাধারণ উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা হয়। এ সব উদ্দেশ্য অর্জন করতে হলে কোন কোন বিষয়বস্তুর মাধ্যমে অর্জন করতে হবে, তা নির্ধারণ করা হয়। এখান থেকেই নির্ধারণ করা হয় বিষয়ভিত্তিক উদ্দেশ্য। বিষয়ভিত্তিক উদ্দেশ্যসমূহকে আবার স্তরভিত্তিক উদ্দেশ্যে বিন্যাস করা হয়। অতঃপর স্তরের ওপর ভিত্তি করে বিষয়ভিত্তিক উদ্দেশ্যকে অর্জন করার জন্য নির্ধারণ করা হয় শিখন ফল।

পাঠক্রমের সাংগঠনিক উপাদান : (১) সক্রিয়তাজনিত উপাদান : পাঠক্রমের সাংগঠনিক উপাদানের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল সক্রিয়তা। শিক্ষার উদ্দেশ্যগুলিকে সার্থকভাবে রূপায়িত করতে হলে সক্রিয় অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীকে শেখার সুযােগ দিতে হবে। (২) সংগতিমূলক উপাদান : পাঠক্রমের বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে সংগতি আনা বিশেষ প্রয়ােজন। একটি বিষয়ের সঙ্গে অন্য বিষয়ের সংযােগ চিহ্নিত করে তারই পাশাপাশি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরিকল্পিত কার্যসূচির মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে পাঠক্রম নির্ধারণ করতে হবে। (৩) পরিবর্তন সম্পর্কিত উপাদান : পাঠক্রম সবসময় পরিবর্তনশীল হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একদিকে যেমন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির ফলে মানুষের জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হচ্ছে, অন্যদিকে, তেমনি সমাজের আশা-প্রত্যাশারও পরিবর্তন ঘটছে। সেই পরিবর্তনের সঙ্গে সংগতি রেখে পাঠক্রম প্রণয়ন করতে হবে।(৪) ক্রমবিন্যাসজনিত উপাদান : পাঠক্রম প্রণয়নের সময় ক্রমবিন্যাসের নীতিটি বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে। তাই যে-কোনাে স্তরের পাঠক্রম নির্ধারণ করার সময় পূর্ববর্তী এবং পরবর্তীস্তরের পাঠক্রমের সঙ্গে তার ক্রম বজায় রাখতে হবে। (৫) আনন্দদায়ক উপাদান : পাঠক্রম প্রণয়নের সময় বিভিন্ন ধরনের সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিকে অন্তর্ভুক্ত করে বিদ্যালয়ে আনন্দদায়ক পরিবেশ গড়ে তােলা হয় এবং শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়মুখী করার চেষ্টা করা হয়।

অন্যধারা/সাগর

- Advertisement -

আরো পড়ুুর