কে এই নূপুর শর্মা, যার জন্য বিপাকে ভারত

- Advertisement -
- Advertisement -

হযরত মুহাম্মদ (সা:) ও হযরত আয়েশা (রা:)-কে নিয়ে বিজেপির নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে উত্তাল মুসলিম বিশ্ব। সমালোচনায় চাপে রয়েছেন মোদী সরকার। বিক্ষোভ মিছিলে গত শুক্রবার (১১ জুন) ভারতও কেঁপে উঠেছে।

এ কারণেই দলীয় নেতাদের টিভি টকশোতে অংশগ্রহণে বাঁধা নিষেধ করে দিয়েছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। কিন্তু যার বিতর্কিত মন্তব্যের কারণেই কঠিন চাপে ভারত, সেই নূপুর শর্মা আসলে কে? কী তার পরিচয়। এমন প্রশ্ন নিয়ে বিভিন্ন গল্প ঘুরে বেরাচ্ছে সামাজিক মাধ্যম থেকে গণমাধ্যমগুলোতেও।

নূপুর শর্মা ছিলেন বিজেপির মুখপাত্র। দলের নীতি আদর্শ চাউর করাই তার কাজ। টিভি টকশোসহ বিভিন্ন সভা সেমিনারে বিজেপির নীতি-আদর্শ প্রচার করে বেড়াতেন। কিন্তু বিতর্কের মুখে সেই পদ এখন আর নেই।

নবীজীকে নিয়ে নূপুর শর্মার মন্তব্যের পরই ভারতের কানপুরে চরম উত্তেজনা শুরু হয়। প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে বহু মানুষ রাস্তায় নামেন। সব দিক থেকে চাপে পড়ে দিল্লির বিজেপি সভাপতি আদেশ গুপ্ত বলেন, প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিল করা হচ্ছে নূপুরের। এবং তাকে বিজেপি থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে।

কে এই নূপুর শর্মা? কী তার পরিচয়?

নূপুর শর্মা অর্থনীতি নিয়ে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হিন্দু কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেন। এরপরে তিনি আইন বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করেন। আইনের উপরেই স্নাতকোত্তর করেছেন লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স থেকে। কলেজ জীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন এই বিতর্কিত বিজেপি নেতা।

নূপুর শর্মা ২০০৮ সালে হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ আন্দোলনের ছাত্র শাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-এর ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে রাজনীতিতে পদার্পন করেন।

২০১১ সালে পড়াশুনা শেষ করে ইংল্যান্ড থেকে ভারতে ফেরার পর রাজনীতিতে নূপুরের দ্রুত উত্থান হয়। নূপুর শর্মা রূঢ়ভাষী ও সুবক্তা হিসেবে ইংরেজি এবং হিন্দি উভয় ভাষাতেই দক্ষ। অনর্গল কথা বলার বিরল প্রতিভার অধিকারী তিনি।

বিজেপির কাছে তার যুক্তি-পরামর্শ তুলে ধরে হয়ে ওঠেন জনপ্রিয়। দিল্লি বিধানসভার নির্বাচনে কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয় ২০১৩ সালে। ৩৭ বছর বয়সী আইনজীবী নূপুর শর্মা দলের তরুণদের কাছেও দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে গেলেন।

২০১৫ সালে বিজেপির প্রার্থী হয়ে দিল্লির বিধানসভার নতুন নির্বাচনে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিপক্ষে নির্বাচন করেন। এতে নূপুর হেরে গেলেও প্রচার ও প্রচারণায় দারুণ দক্ষতা দেখিয়েছেন। এরপরই দিল্লিতে বিজেপি দলের সরকারি মুখপাত্র নিযুক্ত হন। বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র ২০২০ সালে নিযুক্ত হন নূপুর। মোদী সরকারের পক্ষে বক্তব্য দিতে রাতের পর রাত টেলিভিশনের বিতর্ক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন।

 

২০০৮ সালের নভেম্বরের ৬ তারিখ। এসএআর গিলানি একটি আলোচনা সভায় অংশ নিয়েছিলেন। নূপুরও সভাস্থলে পৌঁছেন এবিভিপি-র কর্মীদের নিয়ে। বিজেপির এই নেত্রীর বিরুদ্ধে সংসদ হামলায় অভিযুক্ত এসএআর গিলানিকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। নূপুরের সঙ্গী থুতু ছিটিয়ে ছিলেন গিলানির মুখে। ভাঙচুর শুরু হয়। নূপুর বিভিন্ন ভাবে গিলানিকে অপদস্থ করতে শুরু করেন। সেই থেকেই বিভিন্ন খবরের শিরোনামে আসেন নূপুর।

তখন থেকে নূপুর শর্মার আর পেছন ফিরে তাকানোর প্রয়োজন হয়নি। এগিয়ে যেতে লাগলেন তরতরিয়ে। টিভি টকশোতে বিজেপি মুখপাত্র হিসেবেই নিয়মিত হাজির হন। এসব লাইভ শোতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে গিয়ে চিৎকার চেচামেচি থেকে শুরু করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করতেন নূপুর শর্মা।

দৈনিক অন্যধারা/১২ জুন ২০২২/জ কা তা

- Advertisement -

আরো পড়ুুর