”জীবন্ত মানুষের কফিন” – সৈয়দ রনো

তেল চিটচিটে যে বেঢপ শরীর দেখে 
বিদ্রুপের হাসিতে কলঙ্কমাখা মহাউল্লাস
আকাশে বাতাসে প্রতিধ্বনিত হয়ে
বজ্রপাতের কানফাটা চিৎকার
একবার ভেবেছেন কি?
তামাম ঘটনার ধারাপাত
কতটুকু অগ্নিদহনে মানুষ পুড়ে হয় ভস্মীভূত
কতটুকু দুঃখ তাপে মানুষ হয় ব্যাথা কাতর
কতটুকু নির্যাতনে মানুষ হয় পাষণ্ড পাথর
অর্ধাহার আর অনাহারী শরীর ক্ষয়ে ক্ষয়ে মানব হয় হাড্ডিসার কঙ্কাল

বুঝেছি অনেক আগেই
ভাবুকতার পাড়া মহল্লায় প্রতি রাতে বসে কাম শক্তির হাট,

যেখানে দেদারছে বিক্রি হয় বিক্রিত মানুষিকতা
তাই আর বলতে দ্বিধা নেই
নির্যাতিত এখন মানব দেহরূপি আগ্নেয়গিরির
জ্বলন্ত মুখ
মিনিট নয় প্রতিটি সেকেন্ড গুণে গুণে
ঘাম নির্গত হবার বদলে বের হতে থাকে
দুঃখ আর কষ্টের লেলিহান শিখা

এই সমাজ, রাষ্ট্রের পিত্তথলিতে জমাট বেঁধেছে
শত সহস্র মানুষের আর্তনাদ, অভিশাপ আর
স্বপ্নভেঙ্গে চুরমার হওয়ার ক্রন্দন রোল
ঐতো দেখতে পাচ্ছেন চিকিৎসা বিহীন
মৃত্যু মানুষের কফিন
দোহাই দোহাই ধর্মীয় মুল্যবোধের
নূর হোসেনের মতো লাশনিয়ে আর রাজনীতি নয়

সমাধানের বৈঠকে উপস্থিত মিথ্যাচারী পাপিষ্ঠ
নামি দামি চাটুকার, আত্মবিশ্বাসী পণ্ডিত আর
সেচ্ছাচারী রাষ্ট্র পরিচালনার পার্ষদগণ
তাদের ভাবনার স্তর ছুঁতে পারেনি মানুষের
নিত্যদিনের হা হা কার
গরীবের ভাগ্যলিপি লেখার বিরতিতে কাটছে সময়
খানাখন্দরে জমে থাকা মলমূত্র আর কর্দমাক্ত পানি
শোষণের দাম্ভিকতায় ছুটে চলা গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে
দণ্ডায়মান ফরিয়াদির দহনের ফুষ্কাপরা সমস্ত শরীর ভিজিয়ে দেয়
ভাবে ওরা ভাবে নিরবে নিভৃতে ভাবে এটাই জীবন

প্রকৃত বিচারে সব ভুগাস
সব তামাস গিরির খেল
বাতাসে কানপেতে শোনা যাচ্ছে
একদল মানুষের বোবাকান্না
হাহাকারে বিষাক্ত হচ্ছে বুড়ীগঙ্গার পানি
ঈদুল আজহার উলঙ্গ শহরেও ছোপ ছোপ রক্তের দাগ
দোতলা থেকে ছুঁড়ে ফেলা মাংসও
জোটেনি যার কপালে তার যুথবদ্ধ কাঙ্খাও সময়ের চাকায় পিষ্ট হয়ে খেলে গোল্লাছুট
একবুক আবেগ নিলামে বিক্রি করেছে সেদিন
হতাশার চাদরে মুড়িয়ে রাখে উদিত সকাল।

 

অন্যধারা সাহিত্য সংসদ/আগস্ট/২৮/এসএম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here