টিটিই শফিকুল চারদিন পর পুনরায় নিজ কর্মস্থলে

- Advertisement -
- Advertisement -

অন্যধারা ডেস্ক:

টিটিই শফিকুল ইসলাম

(ছবি: ট্রেনে দায়িত্বরত অবস্থায় টিটিই শফিকুল ইসলাম)

টিটিই শফিকুল ইসলাম আজ মঙ্গলবার (১০ মে) বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে খুলনা-চিলাহাটিগামী আন্তঃনগর ট্রেন রূপসা এক্সপ্রেসের টিটিই হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন তিনি।

শুক্রবার (৬ মে) রেলমন্ত্রীর তিন আত্মীয়কে বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণের দায়ে জরিমানা করার দায়ে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও রোববার সাময়িক বরখাস্তাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। চারদিন পর মঙ্গলবার টিটিই শফিকুল ট্রেনে ডিউটি পেলেন।

(ছবি: কাজে ফিরেছেন টিটিই শফিকুল ইসলাম)

টিটিই শফিকুল জানান, ‘আমার বরখাস্তাদেশ প্রত্যাহার করে কাজের সুযোগ করে দেয়ায় রেলমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি আন্তরিকতা ও সততার সাথে আগামী দিনগুলোতেও দায়িত্ব পালন করবো।’

(ছবি: পুনরায় কাজে যোগদান করছেন টিটিই শফিকুল ইসলাম)

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে কর্মকর্তা (ডিআরএম) শাহীদুল ইসলাম রোববার (৮ মে) দুপুর ১২টায় টিটিই শফিকুল ইসলামকে দায়িত্বে পূণর্বহালের আদেশ দেন। বেলা সাড়ে ১১টায় প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তিনি এ আদেশ প্রদান করেন।

(ছবি: দায়িত্বরত অবস্থায় টিটিই শফিকুল ইসলাম)

ডিআরএম বলেন, টিটিই শফিকুল ইসলামকে পুনর্বহাল করার আদেশ দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে তদন্ত কাজ অব্যাহত থাকবে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় ৩ কার্যদিবসের জায়গায় ৫ কার্যদিবস করা হয়।

এর আগে শুক্রবার (৬ মে) রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেওয়া ৩ যাত্রীকে বিনা টিকিটে এসি কেবিনে ভ্রমণের দায়ে করা হলে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের স্ত্রী শাম্মী আক্তার মনির ফোনেই ট্রেনের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়। এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রীর স্ত্রীর মামাতো বোন ইয়াসমিন আক্তার নিপা।

(ছবি: দায়িত্বরত অবস্থায় টিটিই শফিকুল ইসলাম)

মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেওয়া সেই তিন যাত্রীর একজন হলেন ইমরুল কায়েস প্রান্ত। প্রান্তর মা হলেন ইয়াসমিন আক্তার নিপা। শনিবার নিপা আক্তার জানান, ছেলেদের সঙ্গে ‘অসদাচরণ’ করায় টিটিইকে তিনি বদলি করার জন্য মন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আক্তারকে বলেছিলেন।

তখন মন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী তাকে বলেন, বদলি নয় বরখাস্তই করে দিচ্ছি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি রেলের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ফোন করে বরখাস্ত করতে বলেন। নিপা আরো বলেন, আমার ছেলে ও তার দুই চাচাতো ভাই টিকিট কেটেই ট্রেনে ওঠেছিল। ট্রেনের এসি কেবিনের সিট ফাঁকা থাকায় সেখানে গিয়ে বসে।

(ছবি: দায়িত্বরত অবস্থায় টিটিই শফিকুল ইসলাম)

তখন টিটিই শফিকুল ইসলাম এসে টিকিট দেখতে চান। এসি কেবিনের টিকেট না পেয়ে টিটিই তাদেরকে এসি কেবিন থেকে সরিয়ে দেন। এরপর তারা নিজেদের রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেন। তখন টিটিই আরো খেপে যান। নিপা বলেন, ঘটনার পরপরই যদি টিটিই শফিকুল ফোন করে বলতো যে, তার ভুল হয়ে গেছে। বুঝতে পারিনি।

(ছবি: দায়িত্বরত অবস্থায় টিটিই শফিকুল ইসলাম)

স্যরি-ট্যরি বললে বিষয়টা ঠিক হয়ে যেতো। কিন্তু তিনি তা না করে, বিষয়টিকে ভাইরাল করে দিয়েছেন। জানা গেছে, গত শুক্রবার (৫ মে) রাতে পাবনার ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর ভাগ্নে পরিচয় দেওয়া তিন যাত্রী।

তারা হলেন, মন্ত্রীর স্ত্রীর মামাতো বোনের ছেলে ইমরুল কায়েস প্রান্ত ও তার চাচাত ভাই ওমর ও হাসান। টিকিট না থাকলেও এই তিন জন খুলনা থেকে রাত ৮টায় ছেড়ে যাওয়া সুন্দরবন এক্সপ্রেসের এসি কেবিনের আসনে বসেন। তখন টিটিই শফিকুল ইসলাম তাদের কেবিন থেকে বের করে শোভন বগিতে পাঠান এবং ৩৫০ টাকা করে জরিমানা করেন।

(ছবি: ট্রেনে দায়িত্বরত অবস্থায় টিটিই শফিকুল ইসলাম)

এরপরই ট্রেন ঢাকায় পৌঁছার আগেই ভোররাতে টিটিইকে সাময়িক বরখাস্ত করে মোবাইল ফোনে জানিয়ে দেওয়া হয়। রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর নানাবাড়ি ঈশ্বরদীতে। প্রান্তের মা ইয়াসমিন নিপা একই শহরের নুরমহল্লা কর্মকার পাড়ার। দুই বোন এবার একসঙ্গে একই বাড়িতে ঈদ উদযাপন করেছেন বলেও জানা গেছে।

দৈনিক অন্যধারা/১০ মে ২০২২/জ কা তা

- Advertisement -

আরো পড়ুুর