তলেবান কি পারবে পানশিরে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পানশির উপত্যকা উত্তর-মধ্য আফগানিস্তানের একটি উপত্যকা,১৫০ কিলোমিটার  কাবুল এর উত্তরে, হিন্দুকুশ পর্বতমালার কাছে। এটি পানশির নদী দ্বারা বিভক্ত। উপত্যকায় আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় জাতিগত তাজিকসহ ১০ লক্ষেরও বেশি লোকের বাসস্থান। ২০০৪ সালের এপ্রিল মাসে এটি নতুন পাঞ্জশির প্রদেশ এর হৃদয় হয়ে ওঠে, যা পূর্বে পারওয়ান প্রদেশ এর অংশ ছিল।

আফগানিস্তানের পানশির উপত্যকা দখলে অভিযান শুরু করেছে তালেবান। ক্ষমতা দখলের পরও, তালেবানদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে পানশির উপত্যকা। ১৯৮০’র দশকে সোভিয়েত বাহিনী এবং ১৯৯০’র দশকে তালেবান বাহিনীর বিরুদ্ধেও পানশির উপত্যকা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলো।

উপত্যকাটি ৯,৮০০ ফুট (৩,০০০ মিটার) উঁচু পর্বত দ্বারা বেষ্টিত, যা এখানে বসবাসকারী যোদ্ধাদের জন্য প্রাকৃতিকভাবেই সুরক্ষা ঢাল হিসেবে কাজ করছে। দুর্গম এই জায়গায় আসা-যাওয়ার একমাত্র সরু এবং পাথুরে পথটি পানশির নদীর মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে।

আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে একমাত্র পানশিরকেই এখনো দখলে নিতে পারেনি তালেবান। সেখান থেকেই প্রতিরোধের ডাক দিয়েছেন আশরাফ ঘানি সরকারের ভাইস-প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ। বাকি সব প্রদেশে তাদের সামনে আফগান সেনাবাহিনীর প্রতিরোধ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়লেও হিন্দুকুশ পর্বতমালা ঠেকিয়ে রেখেছে তাদের। দশকের পর দশক গৃহযুদ্ধে কখনো পরাস্ত হয়নি পানশির। যার নেতৃত্বে ছিলেন শাহ আহমদ মাসউদ। কমিউনিস্টবিরোধী যুদ্ধে অসমসাহসিকতার জন্য তাঁকে ‘পানশিরের সিংহ’ নামে ডাকা হয়। আফগানদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবেও তাঁর নাম উচ্চারিত হয়। এই অঞ্চলটি এখনও ন্যাশনাল রেসিসটেন্স ফ্রন্ট অব আফগানিস্তান (এনআরএফ) এর নিয়ন্ত্রণাধীন। এই দলটি প্রতিষ্ঠা করেছেন ১৯৮০’র দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত-বিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনের অন্যতম নেতা আহমাদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমাদ মাসুদ।

ভৌগোলিক কাঠামোর কারণেই পানশির এক দুর্ভেদ্য দুর্গ। কোনও বাহিনী সেখানে প্রবেশের দুঃসাহস করতে পারে না। চারদিকে উঁচু পাহাড় ঘেরা এ প্রদেশের মাঝখানে আছে সমতল ভূমি। বাইরের যে কারও জন্য সে জায়গা যেন এক গোলকধাঁধা।

এখন সময় বলে দিবে তালেবান পানশিরকে দখলে নিবে নাকি পানশির তালেবানের বিরুদ্ধে জোড়ালো প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

অন্যধারা/সাগর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here