নাটোরে জীবনানন্দ দাশ ।। রায়ান নূর

- Advertisement -
- Advertisement -

পত্রিকা অফিসে বুদ্ধদেব বাবু চেয়ারে ঠ্যাং তুলে বসে আছেন। ইদানিং পত্রিকার বেচাবিক্রি নেই। নিয়মিত বের করাও কষ্টকর। ‘বিচিত্রা’ পত্রিকা অফিস থেকে ফিরে অচিন্ত্যকুমার ভাবলেন বুদ্ধের সাথে একবার দেখা করেই যাই। দরজায় পা দিতেই শুনলেন কার যেন তীব্র আওয়াজ। অমিয় সিগারেট ফুকছিল দরজায়। অচিন্ত্য ফিসফিসিয়ে বলে, ঘটনা কি? হা-হা করে অমিয় গলা ছেড়ে বলল, ‘বৃদ্ধ বুদ্ধদেব বারান্দায় বসে ঠ্যাং ছাড়িয়ে গলা ছেড়ে কয়েছেন কঙ্কাবতী, কঙ্কাবতী গো’।
: তার মানে, এই কঙ্কাবতী কে আবার?
: ধুর, আপনি তো আজব লোক। কঙ্কাবতীকে চিনেন না। ঐ যে- ও পাড়ার কি যেন স্ট্রিস্ট ? ওখানকার এক গোয়ালার মেয়ে।
: অহ, হু। শুনলাম জীবনানন্দ বাবু নাকি এসেছেন ?
: ঐ যে ঢুকছে।
: এ যে সাংঘাতিক মিরাক্কেল।
বুদ্ধদেব বললেন, ওহে জীবনানন্দ। কই ছিলে গো? বনলতার দেখা পেলে নাকি এবার।
: হে, হে, কি যে বলি? সেবার ট্রেন ধরে যাবো, কিন্তু শুনলেম নাটোর নাকি ট্রেন পাল্টাতে হবে। খুলনার ট্রেন আবার ছয় ঘন্টা লেট। কি করি, রাত লেগে আসলো। এমনিতেই মশার কামড়। দেখলাম ওখানে একটা কাচাগোল্লার দোকান। কয়টা চেয়ার খালি আছে। সেই বুড়োর একটা মেয়ে ছিল। বললাম, তোমার নাম কী গো? সে হাসতে হাসতে বলল, ঐ যে সাইনবোর্ড।
: ওহ বনলতা! আমাকে একটু জল খাওয়াবে, বড় তেষ্টা পেয়েছে।
সেকি বাবু! এতোদিন কোথায় ছিলেন ?
বড় বড় চোখ করে তাকালে। মনে হলো, ও বুঝি আমারে চেনে ?
বুদ্ধদেব বলল, তারপর ?
: শুধু পানি নয় ও কাচাগোল্লাও খাওয়ালো। কি যে প্রশান্তি!
: বটেরে, কোথায় যাওয়া হয়েছিল তখন ?
: ঐ একটা বিজ্ঞাপন দেখেছিলাম। একটা কলেজে নাকি মাষ্টার নেবে। ভাবলাম ইংরেজি পডুয়া লোক, হয়তো চাকরীটা হয়ে যাবে। সেখানে গিয়ে দেখি কী যেন পরীক্ষা নেবে। পরীক্ষা দিলুম। শুনলুম এর পরে আবার ভাইভা। যে হালটা হলো! চাকরী আর হলোনা। আবার ফিরলাম ফিরতি ট্রেনে।
: আহাহা, পূর্ববঙ্গে চাকরির আকাল !
: আপনারা তো অধ্যাপক হয়েছেন, গায়ে টের পাননা।
: আচ্ছা, ওই বনলতার কী হলো।
: ওহ, বললাম আজ রাতটা থাকতে হবে।
সে মুচকী হেসে বলল, সেকি বাবু আপনেরা বামন, আমাদের ঘরেই থাকবেন।
বললাম, তোমাকেও পদবী দেবো।
সে তখন ফিসফিসিয়ে বলল, কি?
আন্দাজেই বললুম, সেন। ও, তো ব্যাপক খুশী।

- Advertisement -

আরো পড়ুুর