প্রিয় অবন্তীকা –
ঘুম নামক সাময়িক মৃত্যুর কোলে যখন ঢলে পড়েছি তখন এক চিন্তাহীন মস্তিষ্কে জড় পদার্থ আমি! কবিতা লিখবো নাকি ম্রিয়মাণ আত্মাকে পুনরোজ্জীবিত করবো (?) এটা ভাবতে ভাবতেই মৃত্যুর কাছে পরাজয় মেনেছি ! মনুষ্যজীবন বড় দুর্বিসহ তা তোমার চেয়ে কে আর ভাল বুঝবে? জানি ভোগ-বিলাসের দুনিয়ায় মৃত্যু কাম্য নয়, হাজার বছর বেঁচে থাকার স্বপ্নে বিভোর থেকেও জীবদ্দশায় নিয়েছি বারবার মৃত্যুর স্বাদ ! মরতে মরতে যখন বেঁচে যাই তখন যুক্তিতর্কের উর্ধ্বে উঠে ঈশ্বরকেই ধন্যবাদ জানাই।
প্রিয়তমা- কালবৈশাখী ঝড়ে যখন স্বাক্ষাত যমদূত সামনে আমার তখন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে বসে তুমি ঈশ্বরকে ডাকছিলে,বাইক দুর্ঘটনায়ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ছিলে সেদিন। আমার বেঁচে থাকা – না থাকা নিয়েই আজকাল দুশ্চিন্তাগ্রস্ত অথচ নিজের জন্য ভাবোনি কিছুই তুমি, জিজ্ঞেস করলেই ঈশ্বরকে দেখিয়ে দাও (আধ্যাত্মিকতায়/হতে পারে ছিন্নমূল মানুষের জীবন)!
জানি জাগতিক চাওয়া পাওয়ায় বিশ্বাসী নও তুমি, আত্মার বিশুদ্ধতায় বেঁচে থাকার যে অভিপ্রায় তা নিশ্চয়ই অনুকূল নয় পারিপার্শ্বিকতায়! ‘সময়কে সময় দেবো’ – এত ধৈর্য নেই আমার, অস্থিরচিত্তের মানুষ হয়ে শুদ্ধতার সাধনায় ব্রত হয়েছি – এটা ভাবতেও অস্থির লাগে তোমার! অবন্তীকা – কি পেলাম আর কি পেলাম না ? জীবনের এই গুন-ভাগ-বিয়োগে হারিয়ে গেছে ত্রিশটি বসন্ত আমার, চোখের কোলের কালিই বলে দেয় কাটিয়েছি কত নিদ্রাহীন রজনী ! ডিভানে শুয়ে করেছো হিসাব কত ঘন্টায় হয় দিন-মাস, কতটা আঁধার হলে রাত্রি হয় প্রভাত?
প্রিয়তমা- ভালোবাসার কথা বলে আজ আর আবেগাপ্লুত করবো না তোমায় , জানি মেঘে ঢাকা আকাশ আমার! অতীত এবং ভবিষ্যৎ যদি না থাকে তোমার তবে মৃত্যুকে করি থোরাই কেয়ার! মৃত্যুই যদি হয় চিরন্তন তবে অলিক সুখে কেনো হবো কালান্তর? আকাশের বুকে যদি সাত রঙে রামধনু আঁকতে না পারি তবে মৃত্যুই হোক শেষ সম্বল আমার!
অবন্তীকা – রাতের আকাশে যখন থাকে না তারা তখন বুঝে নিও প্রিয়তমা- অসময়ে খসে পড়েছে কোন নক্ষত্র প্রেম-ভালোবাসা ছাড়া! প্রেমহীন বুকে যদি দাবানল হয় ভালোবাসা তবে পুড়ে মরবে ধূমকেতু অগ্নি ছাড়া! মরণেও যদি হয় সুখ তবে দিও “ভালোবাসা” যেমন দিয়েছিলো কৃষ্ণের প্রতি রাধা!
ইতি-
সুশান্ত হালদার