নিজস্ব প্রতিবেদক : একটু একটু করে সংসারের বিপদসংকুল সময়ের জন্য টাকা জমান মৌসুমী শীমা। কিন্তু দেশের এই করোনা ক্রাইসিস সময়ে মন ভালো নেই তার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা অসহায় গরীব মানুষগুলোর হাহাকারই মন খারাপের মূল কারণ। বিষয়টি শেয়ার করেন স্বামী মেসবাহ উদ্দিন আহমেদের সাথে। পরামর্শ করে রোজার আগের দিন তারা সিদ্ধান্ত নিলেন, স্ত্রী (শীমা’র) কাছে জমানো কিছু টাকা আছে, সেখান থেকে খরচ করে প্রথম রোজাতেই ১০০ জন অসহায় গরীব মানুষকে ইফতার করিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াবেন। যেই কথা, সেই কাজ। বাজার করে আনলেন মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ। হোম কোয়ারেন্টিনের কারণে কাজের লোক না থাকায় রোজার প্রথম দিন সকাল থেকেই কাজ করে দম্পতি দু’জনে মিলে রান্না করলেন। পরে নিজ হাতেই ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে পূর্ব শেওড়াপাড়ার জামতলা বাজার এলাকা ও বেগম রোকেয়া স্বরণীস্থ এলাকায় পরিচিত ও অপরিচিত গরীব ও দুস্থ মানুষদের মাঝে তা বিতরণ করেন।
মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ সাপ্তাহিক অন্যধারাকে বলেন- ‘করোনার কারণে লক ডাউনের এ সময়ে অনেক মানুষ কর্মক্ষম হয়ে পড়েছেন। এতে করে অনেকের বাড়িতে খাবার নেই। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে স্বামীরা অনেক কষ্টে আছেন। আমরা আমাদের অস্থান থেকে এতোটুকু করার চেষ্ট করলাম। মূলত: স্ত্রীর জমানো টাকা থেকেই আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। এজন্য আমি ব্যত্তিগতভাবে শীমাকে (স্ত্রী) ধন্যবাদ জানাই।’
মৌসুমী শীমা জানান- ‘নিউজ মিডিয়াগুলোতে দেখি দেশের এই ক্রান্তিকালে সরকারী-বেসরকারীভাবে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে দেখি খাবারের জন্য অসহায় মানুষগুলো কতটা হাহাকার করছে। অনেকের কাছে কোনো ত্রাণ পৌঁছায়নি। তবে কে কোথায় কীভাবে এসব ত্রাণ বিতরণ করছে? এসব কিছু দেখে আমি ভীষণ রকম কষ্ট পেয়েছি। হোম কোয়ারেন্টিনে থেকে এখন অর্থনৈতিকভাবে আমরাও কষ্টে আছি, তারপরও মনকে আটকাতে পারিনি। গরীবদের জন্য কিছু করতে পারলে মনের দিক দিয়ে প্রশান্তি লাগে। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’
একমাত্র কন্যা আয়াতকে নিয়েই মৌসুমী শীমা ও মেজবাহ উদ্দিন আহমেদের সংসার।
সাপ্তাহিক অন্যধারা/২৫ এপ্রিল-২০২০/জেডএন