অন্যধারা ডেস্ক# বিশ্বের সব চেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে চলছে একদম হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই। কেবল লড়াই বললে ভুল বলা হবে। অনেক সময় ট্রাম্প আর হিলারির দুজনার দিকে ছুঁড়ে দেওয়া মন্তব্য একদম মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হয়ে লড়াই করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্রেট পার্থী হিলারি ক্লিনটন। আর এই নিয়ে আমাদের দেশের মতো গোটা কয়েক রাষ্ট্র খুবই উদ্গ্রীব-কার কোর্টে যাবে প্রেসিডেন্টের বল?
সিএনএন বিবেচনা করে দেখেছে- দুই প্রার্থীর বিতর্কটিতে মার্কিন ভবিষ্যত নীতি নির্ধারণ বিষয় প্রাধান্য না পেয়ে বরং ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ টেনে আক্রমণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় যা যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নির্বাচনী ইতিহাসে ‘সবচেয়ে কদর্য’ বিতর্কের উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
আর বিবিসি বলছে, হিলারি এবং ট্রাম্প পরস্পরের প্রতি যেভাবে ব্যক্তিগত বিদ্বেষপূর্ণ এবং আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করেছেন, সেটি অনেকটা নজিরবিহীন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে হিলারি ক্লিনটনের বিচার করার হুমকি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি হিলারিকে তিনি জেলে নেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনকে নারী নির্যাতনকারী বলে অভিহিত করেছেন। পাল্টা জবাবে হিলারি ক্লিনটন সম্প্রতি প্রকাশিত ট্রাম্পের যৌন রগরগে কথোপকথনের টেপের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ওই টেপই বলে দেয় ট্রাম্প কে। এ জন্য ট্রাম্প আমেরিকার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। বিতর্কে এমনই ব্যক্তিগত আক্রমণ উঠে এসেছে। তবে বিতর্কের পর সিএনএন-এর মতামত জরিপে হিলারি জয়ী হন। ৫৭ শতাংশ দর্শক হিলারির পক্ষে এবং ৩৪ শতাংশ দর্শক ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন বলে মতামত জানিয়েছেন। সরাসরি বিতর্ক দেখেছেন এমন ব্যক্তিরা ওই জরিপে ভোট দেন।
সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অবস্থায় আত্মপক্ষ সমর্থনে হিলারির স্বামী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের যৌন কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ টানার কদর্য পথটিই বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। বিতর্কে বিল ক্লিনটন সম্পর্কে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমারটা কেবল কথা, আর বিল ক্লিনটন তো করে দেখিয়েছেন।’ আর ওই অডিও তাকে উপস্থাপন করে না বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প। ‘কিন্তু আমার ধারণা, যারা এটি শুনেছেন তারা বুঝতে পারছেন, এটি কেবলমাত্র তাকেই উপস্থাপন করে, বলেন হিলারি।’ তারপর আপত্তিকর মন্তব্যের ওই টেপকে ‘লকার রুমের কথা’ বলে উড়িয়ে দেন ট্রাম্প। বলেন, নারীদের প্রতি তার যথেষ্ট ‘শ্রদ্ধা’ আছে।অনুষ্ঠান চলার এক পর্যায়ে ট্রাম্প উপস্থাপক-উপস্থাপিকাদের অবমাননা করে বক্তব্য রাখেন। বলেন, তারা হিলারির প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছেন। এ সময় ট্রাম্প বিরক্তি ভরা কণ্ঠে বলেন, ‘খুব ভালো’। একজনই তিনজনের মুখোমুখি। অর্থাং তিনি এ সময় হিলারির পক্ষে দুই উপস্থাপক-উপস্থাপিকাকে যোগ দাঁড় করিয়ে দিয়ে তাদের সংখ্যা তিন বলে উল্লেখ করেন। এর কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প কয়েকজন নারীকে সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করেন। এসব নারী সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছিলেন। তার এমন কাণ্ডকে সিএনএন লিখেছে, ‘সারপ্রাইজ’। ওই সব নারী পরে দর্শকসারিতে বসে পড়েন।
এবার একটু জেনে নেই এই দুইজন সন্মানিত প্রার্থির ইতিহাস।ট্রাম্প এর পুরো নাম ডোনাল্ড জন ট্রাম্প। জন্ম ১৯৪৬ সালের জুন মাসের ১৪ তারিখ নিউ ইয়র্কের কুইন্স এলাকায়। তার বাবা ফ্রেড ট্রাম্প ছিলেন একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী। ১৯৬৮ সালে পেনিসেলভিনিয়া ইউনিভার্সিটির অধীন হোয়ারটন স্কুল থেকে ট্রাম্প গ্র্যাজুয়েশন সমাপ্ত করেন এবং ১৯৭১ সালে বাবার প্রতিষ্ঠান রিয়েল এস্টেট ও কন্সট্রাকশন কোম্পানীর দায়িত্ব নেন যা পরবর্তিতে ট্রাম্প অর্গানাইজেশন নামে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তিতে তিনি চলচ্চিত্র ও টিভি অনুষ্ঠান প্রযোজক এবং রিয়েলিটি শো এর উপস্থাপক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি রিপাবলিক পার্টিতে যোগ দেন এবং ২০০০ সালে পার্টি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নমিনেশন নিতে চাইলেও পরবর্তিতে নিজেকে গুটিয়ে নেন। জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ফোর্বস এর জরীপে তিনি বিশ্বের ৩২৪ তম ধনী ব্যক্তি এবং আমেরিকায় ১৫৬ তম। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ি তাঁর গচ্ছিত এবং বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ ৩.৭ বিলিয়ন ডলার। ব্যক্তিজীবনে ট্রাম্পের স্ত্রীর সংখ্যা ৩ এবং সন্তানের সংখ্যা ৫। প্রথম দুই স্ত্রীর সাথে ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার পর ২০০৫ সালে বিয়ে করা মেলানিয়ার সাথেই সংসার করছেন এখনও। ২০১৫ সালে নিজেকে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন এবং অদ্যাবধি লড়াই করে যাচ্ছেন।
ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি দিয়ানে রডহাম এর জন্ম ১৯৪৭ সালের ২৬ অক্টোবর আমেরিকার সিকাগো শহরের ইলিন্ইুস এ। ১৯৬৯ সালে তিনি উইলেসলি কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করেন। কনগ্রেশনাল লিগ্যাল কাউন্সেলর হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও এক সময় তিনি আরাকানসাস চলে আসেন এবং ১৯৭৭ সালে বিল ক্লিনটন এর সঙ্গে বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ হন। একই বছর তিনি আরাকানসাস এডভোকেটস ফর চিলড্রেন এন্ড ফ্যামিলিজ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি লিগ্যাল সার্ভিস করপোরেশনের ১ম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৮৩ সালে তার স্বামী বিল ক্লিনটন আরাকানসাসের গভর্ণর হলে তিনি ফার্স্টলেডি হিসেবে বিবেচিত হন। ১৯৬৮ সাল থেকেই তিনি ডেমোক্রেট পার্টির সাথে যুক্ত থাকেন যদিও এর আগে তিনি ছিলেন একজন রিপাবলিকান। ১৯৯৩ সালে স্বামী বিল ক্লিনটন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হলে নিয়ম অনুযায়ী হিলারী ফার্স্ট লেডি। ২০০০ সালে তিনি প্রথম নারী সিনেটর হিসেবে জয়লাভ করেন। ২০০৮ সালের মার্কিন নির্বাচনে তিনি পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার যুদ্ধে নামেন এবং বারাক ওবামার কাছে হেরে যান। ওবামার জয়লাভের পর তিনি সেক্রেটারি অব স্টেট এর পদমর্যাদা লাভ করেন (২০০৯-২০১৩) । পরবর্তিতে ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পার্টি থেকে মনোনয়ন লাভ করেন। তাঁর একমাত্র কন্যা সেলসি।
এনবিসি’র কমেডি ধাচেঁর টকশো ‘লেইট নাইট উইথ সেঠ মেয়ার্সে’ রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এভাবে আক্রমণ করেন হিলারি। অনুষ্ঠানের উপস্থাপকের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ ধরে আমি ভাবছি যে, আপনারা এবং আমরা প্রত্যেকে অনেক কিছু নিয়েই হাসি তামাশা করি। কিন্তু ট্রাম্প সেগুলোকে ছাপিয়ে গেছে এবং সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। এখন তিনি যা বলছেন, তা কেবল লজ্জাজনক আর ভুলই নয়, তা বিপদজনকও।’হিলারি আরো বলেন, ‘রিপাবলিকানদের অনেকেই মুসলিমদের নিয়ে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেন। তাদের ভাষা হয়তো অতটা খোলামেলা থাকে না, তবে তাদের ধ্যান-ধারণা একই।’
এরপরই মুসলমানদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্যালিফোর্নিয়া হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে আসলে কী ঘটে চলেছে, সেটা খুঁজে বের করার আগ পর্যন্ত এই প্রবেশাধিকার সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা দরকার বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। জনমত জরিপের বরাতে তিনি দাবি করেন, মার্কিনিদের প্রতি মুসলমানদের ঘৃণা দেশটাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিতে পারে। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণেরও পরামর্শ দেন তিনি। এরপর নিজের দেশ এবং দেশের বাইরে ব্যাপক সমালোচিত হন ট্রাম্প।
বিতর্কের এক পর্যায়ে ট্রাম্প বলেন, ই-মেইল কেলেঙ্কারির জন্য হিলারির কারাগারে থাকা উচিত। নির্বাচনে বিজয়ী হলে তিনি হিলারির বিষয়ে তদন্ত চালাতে একজন স্পেশাল প্রসিকিউটর নিয়োগ দেবেন। ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের জবাবে হিলারি বলেন, ট্রাম্প যা বলেছেন সেটা একেবারেই মিথ্যা। এতে আমি বিস্মিত হইনি। এটা বরং খুবই ভালো হয়েছে যে, ট্রাম্পের মতো একজন বদমেজাজি লোক আমাদের দেশের কর্তা হতে পারেন না। হিলারির এমন বক্তব্যের মাঝপথেই ফের হিলারিকে জেলে পাঠানো উচিত বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
শরীরী ভাষা বিশেষজ্ঞ এবং সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোরের নীতি উপদেষ্টা ক্রিস উলরিচও প্রায় একই মত দেন। তার মতে, ‘হিলারি আজ রাতে খেলতে এসেছিলেন। তিনি প্রথম শ্রেণীর গেম খেলেছেন। তিনি ছিলেন পরিশীলিত।’
ট্রাম্প যেভাবে হিলারির যুক্তি প্রদর্শনকালে হস্তক্ষেপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা তাকে নেতিবাচক হিসেকে দেখছেন। পুরোটা সময় তিনি হিলারির বক্তব্যে হস্তক্ষেপ করেছেন এবং তার মুখের ওপর কথা বলতে চেয়েছেন। এতে স্পষ্ট যে নারীদের ব্যাপারে তার শ্রদ্ধার ঘাটতি রয়েছে।
ল্যানকাস্টার মনে করেন, বেশিরভাগ লোক যেমনটা আশা করেছিলেন হিলারি তার চেয়ে কিছুটা ভালো করেছেন আর ট্রাম্প আরও কিছুটা খারাপ করেছেন। তার মতে, হিলারি ছিলেন চিন্তাশীল, বুদ্ধিদীপ্ত আর ট্রাম্প ছিলেন আবেগপ্রবণ ও বিস্ফোরক। ট্রাম্পকে অসহিষ্ণু ও অবিবেচক বলে মনে হয়েছে।
শুরু থেকে ট্রাম্প এর মুসলিম বিদ্বেষ, নির্বাচিত হলে আমেরিকায় অভিবাসিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপের মতো দৃষ্টিভঙ্গী তাকে ব্যাকফুটে নিয়ে যায়। একই সাথে তিনি সিরিয়া প্রশ্নে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ওবামার চাইতে পুতিনের অনুসৃত নীতিকে সমর্থন করলে ক্ষেপে যান ওবামা। অতীতের সকল দৃষ্টান্তকে অতিক্রম করে আমেরিকার কোনো ফার্স্টলেডি তাঁদের দলীয় মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাতে মাঠে নামেন। শুধু তাই নয়, বিশ্ব এই প্রথম কোনো আমেরিকান প্রেসিডেন্টকে দেখেছে তার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারনায় নিজেকে নিয়োজিত করতে। লক্ষণীয় যে- এই প্রচারণাটা ব্যক্তি আক্রমনের চুড়ান্ত রেকর্ড অতিক্রম করেছে। হিলারি, মিশেল এবং ওবামার বক্তব্যে একটাই সুর- ‘ট্রাম্প ইজ আনফিট এজ এন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট’। যার কোনো যোগ্যতাই নেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হবার। সম্প্রতি ট্রাম্প আমেরিকান ইহুদীদের ভোট পেতে ইসরাইলের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কোনো রাখঢাখ না রেখেই ট্রাম্পকে সমর্থন করেছেন। ট্রাম্প বলছেন- হিলারি ক্ষমতায় আসলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেঁধে যাবে, আর তারই অংশ হিসেবে ভোটারদের প্রভাবিত করার জন্যে রাশিয়া পারমানবিক ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। প্রায় সব রকমের জরীপে এবং সর্বশেষ কয়েকটি রাজ্যের আগাম নির্বাচনী ভোটার জনমত জরীপে এগিয়ে আছেন হিলারি। পরাজয় আশঙ্কা করে ট্রাম্প আগামি নির্বাচনে কারচুপি হবে বলে প্রচারনা চালাচ্ছেন।
বিতর্ক যতো দূরই গরাক না কেন প্রশ্ন হচ্ছে এই নির্বাচনে বাংলাদেশের মতোন একটি মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রের অবস্থান আদৌ কি পরিবর্তিত হবে?পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে আওয়ামীলীগের পুরনো বন্ধু ডেমোক্রেট এখন শত্রুতে পরিণতঃ অন্যদিকে বাংলাদেশের চিরদিনের মিত্র রাশিয়া এখন রিপাবলিকানদের সমর্থন করছে। যদিও বলা হয়ে থাকে, গণতান্ত্রিক স্থিতিশীল রাষ্ট্রের ক্ষমতায় যে দলের হাতেই আসুকনা কেন, পররাষ্ট্রনীতিতে তেমন একটা পরিবর্তন হয়না। যার উজ্জ্বল নিদর্শন ভারত। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ তৎকালিন ভারতের ক্ষমতাসীন কংগ্রেস তথা ইন্দিরা গান্ধীর সহায়তা পেয়েছিলো যে কারণে এই দলের সাথে আওয়ামীলীগের অকৃত্রিম বন্ধুত্ব। সে কারণে ভারতের বিগত নির্বাচনে কংগ্রেসকে হারিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর আমাদের দেশের বর্তমান বিরোধী শিবিরে আনন্দের বন্যা বয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু তারা ভুলে গিয়েছিলো যে- কংগ্রেসের ধর্ম নিরপেক্ষ নীতির বিপরীতে বিজেপির অবস্থান কতটা কট্টর। বিজেপি আর যাই করুক, পাকিস্তান কিংবা পাকিস্তানের অনুসারিদের উপর বরাবরই খড়গ হস্ত। ভারতে যে দলই ক্ষমতায় আসুক, তারা তাদের পররাষ্ট্র নীতিতে অটল। তাঁরা বাংলাদেশে ইসলামি মৌলবাদের বিপক্ষে এবং পাকিস্তানের দোসরদের সাথে মিত্রতা করবেনা এবং এদেশে ভারতের প্রতি হুমকী সৃষ্টিকারি কোনো দল বা গোষ্ঠী ঘাঁটি গাড়ুক সেটা চাইবেনা।
চীন এবং ভারতের মধ্যে যতোই শত্রুতা থাকুকনা কেন বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গী বর্তমানে এক এবং অভিন্ন। উভয় পক্ষ চায়না আমেরিকা বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশে সামরিক ঘাঁটি করুক। যার ফলে বাংলাদেশকে পক্ষে রাখতে চীনের এই বিপুল বিনিয়োগে মোদি প্রশাসনের উষ্মা নেই। অন্যদিকে ডেমোক্রেট শিবির আমেরিকান বাংলাদেশী ভোটারদের হিলারির পক্ষে টানার জন্যে মরিয়া। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট এর বাংলাদেশ সফর এবং বিপুল অংকের ঋণ প্রদানের পেছনে তাৎপর্য রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। যদিও হিলারি তলে তলে ড. ইউনূসের মাধ্যমে বিএনপি জামাত এর কাছ থেকে ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ করেছেন বলে শোনা যায়।
শেষ সংবাদ যা হলো-রয়টার্স/ইপসোসের সর্বশেষ জরিপে দেখা যায়, ট্রাম্পের চেয়ে হিলারির এগিয়ে থাকার ব্যবধান ফের বৃদ্ধি পেয়ে ৬ শতাংশ পয়েন্টে এসে দাঁড়িয়েছে। আর মাত্র পাঁচ দিনে নতুন কোন বিতর্কের সূত্রপাত হয় কীনা তাই নিয়ে উদ্গ্রীব আছে সমস্ত মিডিয়া পাড়া।