আ. লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে সন্ত্রাসী সুমন গংদের আলোকিত প্রতিদিন পত্রিকার ঘিওর অফিসে হামলা: দখল করার পায়তারা

0
1029

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার বাস ষ্ট্যান্ড সংলগ্ন দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন পত্রিকার অফিস আওয়ামীলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে গায়ের জোরে দখলে নিতে চায় সন্ত্রাসী মাহাবুবুল হক সুমন। গত ২৮/১০/২০২২ইং তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৬:০০ ঘটিকার সময় ঘিওর বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন পত্রিকার অফিসে সন্ত্রাসী মাহাবুবুল হক সুমন চার পাঁচজন অপরিচিত সন্ত্রাসী নিয়ে অনধিকার প্রবেশ করেন। তখন সাব অফিসে কর্মরত ছিলেন বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ এনামুল হুদা। তাকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি দেয় । সন্ত্রাসী উচ্চস্বরে বলিতে থাকেন যে কোন মূল্যেই হোক আলোকিত প্রতিদিন পত্রিকা অফিস সহ জমি দখল করিবে তাতে কেউ বাঁধা দিলে তাদের উপর আক্রমন করিবে। সন্ত্রাসী সুমন অত্যন্ত খারাপ ও লোভী প্রকৃতির লোক।
জানা যায়, ঘিওর নিবাসী আব্দুল মান্নানের স্ত্রী মীনা আক্তার এর নিকট থেকে ২২/১১/১৯৮৪ সালে সৈয়দ আব্দুল লতিফ জায়গা ক্রয় করে ভোগ দখল করে আসছিলেন। এ অবস্থায় ৮২৩ দাগের ৯ শতাংশ ভূমির বিরুদ্ধে ঘিওর নিবাসী অধীর চন্দ্র সরকার দেওয়ানি ৪/২০০৭ মামলা করেন। বিবাদী সৈয়দ আব্দুল লতিফ গং এডভোকেট সামসুল হককে নিজ পক্ষের উকিল নিযুক্ত করে মামলা পরিচালনা করতে থাকেন।  ১৩/২/২০১২ তারিখে বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালত সৈয়দ আব্দুল লতিফ সাহেব এবং রায়হানকে ভূমি প্রদান করে রায় এবং ডিক্রি জারি করেন। এরপর অধীর চন্দ্র সরকার বাদী হয়ে উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে যুগ্ন জেলা জজ কোর্টে ৬১/২০১২ আপীল করেন। বিজ্ঞ যুগ্ন জেলা জজ উক্ত আপিল খারিজ করে পূর্বের রায় ও ডিক্রি বহাল রাখেন । এরপরই ২০১৯ সালে মক্কেলের ৮২৩ দাগের নয় শতক জায়গা দখলের উদ্দ্যেশে ফন্দি ফিকির শুরু করে এডভোকেট সামসুল হক । যদিও উকিল হয়ে নিজ মক্কেলের যায়গা ক্রয় করা উকালতি আইনের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধ বিষয়। এরপরও তিনি নিজ মক্কেল রায়হান এর নিকট থেকে জমি ক্রয় করে বাকি জমি মক্কেল লতিফ সাহেবের জায়গা জোর করে দখল করার ইচ্ছা পোষণ করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় তিনি গুন্ডা বাহিনী দিয়ে ২৩/৪/২০১৯ তারিখে লতিফ সাহেবের জায়গা ভাংচুর করেন।

যার দরুন আব্দুল লতিফ সাহেবের মেঝো পুত্র বাদী হয়ে সি আর মামলা ৬৪/২০১৯ মোকদ্দমা দায়ের করেন । পরবর্তীতে মহামান্য কোর্ট মামলার তদন্দ প্রতিবেদনের জন্য ঘিওর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের নিকট প্রেরণ করেন। তিনি সুদীর্ঘ তদন্ত করে ১১/১২/২০১৯ তারিখে তদন্ত রিপোর্ট বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে প্রেরণ করেন। সেখানে তিনি ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। মামলাটি আজও চলমান রয়েছে বলে জানা যায়।

এরপর ২০২২ সালে আলোকিত প্রতিদিনের বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ এনামুল হুদা উক্ত ঘরটি পত্রিকা অফিস হিসেবে সৈয়দ নাজমুল হুদার নিকট থেকে ভাড়া নেন।
এমতাবস্থায় সামসুল হক মারা গেলেও তার পুত্র সুমন পুনরায় জায়গা দখলের পায়তারা করেই চলেছেন ।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর -২০২২) সন্ধ্যা ছয়টার সময় আলোকিত প্রতিদিনের বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ এনামুল হুদা তার অফিস পরিস্কার করতে ছিলেন। এমতাবস্থায় সামসুল হকের পুত্র মাহবুবুল হক ওরফে সুমন সেখানে গিয়ে তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে জোর করে ঘর দখলের চেষ্টা করেন। ঘটনার এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন এসে বাধা প্রদান করেন। তখন সুমন বলেন -আমি দাবি করলাম এটা আমার জায়গা আমি এটা দখল করেই ছাড়বো। এরপর এ জায়গায় তোদের দেখলে অবস্থা ভয়াবহ হবে।

এ ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সৈয়দ এনামুল হুদা অন্যধারার এ প্রতিবেদক কে জানান, সুমন তার বাবার নেতৃত্বে ২০১৯ সালে একবার অবৈধভাবে এ জায়গা দখল করতে এসে ঘর ভেঙ্গে ছিলেন। আজ এই পত্রিকা অফিসকে সুমন দখল করতে চাচ্ছেন। এই ভূমিদস্যু উকিল পরিবার পেশি শক্তি খাটিয়ে এই অফিসটি আবার দখল করতে চাচ্ছেন। আমি এ ব্যাপারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজনের নিকট জানতে চাইলে তারা ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন- এটা আব্দুল লতিফ সাহেবের জায়গা। তিনি আশির দশক থেকে এ জায়গা ক্রয় করে ভোগ দখল করে আসছেন। বর্তমানে এটি পত্রিকা অফিস হিসেবেই ব্যবহার হয়। কিন্তু ভূমিদস্যু এডভোকেট সামসুল হক ও তার ছেলে জোর করে জায়গা দখলের পায়তারা করছেন।

এ বিষয়ে ঘিওর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম টুটুল বলেন, এখানে সৈয়দ আব্দুল লতিফ সাহেবের জায়গা আছে এটা আমরা সবাই জানি। যদি সামসুল হক এর পুত্র সুমন এখানে আবার জায়গা দখল করতে এসে থাকে তাহলে সে খারাপ কাজ করেছে। পুর্বেও ঘর ভেঙ্গেছিল। ঘটনা সত্য আমি জানি বিষয়টি।

এ ব্যাপারে ভূমিখেকো সুমনের সাথে মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আলোকিত প্রতিদিন পত্রিকার ঘিওর সাব অফিসের দায়িত্বে রয়েছেন বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ এনামুল হুদা। তিনি জান মালের নিরাপত্তার জন্য ঘিওর থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেছেন যার জিডি নং -১২৭৪, তাং ২৯/১০/২০২২ ইং।

এ বিষয়ে ঘিওর থানার ওসি জনাব মো. আমিনুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ফৌজদারির বিষয়টি পাশ কাটিয়ে যাবার চেষ্টা করে বলেন – আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।

অন্যধারা/২৯ অক্টোবর -২০২২/এসএএইচ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here