চাকরি না পেয়ে হতাশ, ফেসবুক লাইভে একাডেমিক সনদপত্র ছিঁড়লেন যুবক

0
140

অন্যধারা ডেস্ক

ইচ্ছে ছিল চাকরি করে পরিবারের হাল ধরবেন, দায়িত্ব নেবেন বাবা-মায়ের, অভাবের সংসারে সচ্ছলতা আনবেন। তবে দীর্ঘ সময় চেষ্টার পরও চাকরি না পাওয়ায় হতাশায় একাডেমিক সব সনদপত্র ছিঁড়ে ফেলেছেন বাদশা মিয়া নামে নীলফামারীর এক যুবক। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে শিক্ষা জীবনে অর্জিত সব একাডেমিক সনদপত্র ছিঁড়ে ফেলেন এই যুবক

বাদশা মিয়া ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর খাতা গ্রামের বাসিন্দা মহুবার রহমানের ছেলে। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বাবা।

দীর্ঘ সময় ধরে চেষ্টা করেও চাকরি না পেয়ে বাদশা ফেসবুক লাইভে বলেন, আসলে আমার ভাগ্যটাই খারাপ। কত মানুষ ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়া করে খাচ্ছে। আর আমি এত সার্টিফিকেট নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও একটা সরকারি বা বেসরকারি চাকরি জোটাতে পারিনি। সনদপত্র অনুযায়ী চাকরির বয়স শেষ, এখন এগুলো রেখে লাভ কী? বয়স থাকতেই তো চাকরি জোটাতে পারিনি আমি।

বাদশা আরও বলেন, আমার বাবা খেয়ে না খেয়ে আমাকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা ও ছোট ভাই-বোনদের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। বর্তমান সমাজে সবচেয়ে অসহায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত ছেলেরা। এরা না পারে চাকরি জোটাতে, আবার না পারে অর্থের অভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে।

শাহিবুর ইসলাম নামে আরেকজন লিখেছেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ক্ষোভ থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে ইচ্ছাশক্তি থাকলে বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানেই ভালো কিছু করা সম্ভব। হতাশাকে পাশ কাটিয়ে নতুন উদ্যমে নিজেকে তৈরি করুন, নতুন কিছুর জন্য ভাই।

মঞ্জুর-ই-এলাহী লিখেছেন, বাদশা ভাই আপনি আমার একজন ভালো শুভাকাঙ্ক্ষী। বেশ কবার দেখাও হয়েছিল আপনার সঙ্গে। নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ হতো এক সময়। ভিডিওটা দেখে বুকের ভেতর হাহাকার তৈরি হচ্ছে ভাই। বিশ্বাস করতে পারছি না এমন একটা হৃদয়বিদারক কাজ করে বসবেন।

বাদশার বাবা মহুবার রহমান বলেন, চাকরির বয়সসীমা শেষ হওয়ায় বেশ কিছু দিন থেকে হতাশায় ভুগছিল বাদশা। দিন দিন হতাশা বেড়ে যাওয়ায় সে তার একাডেমিক সার্টিফিকেটগুলো কাউকে না জানিয়ে ছিঁড়ে ফেলেছে।

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, আমরা তো একটি সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করতে পারব না। তবে যুব উন্নয়নের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের আওতায় তাকে নিয়ে আসব, যাতে তিনি উদ্যোক্তা হতে পারেন। চাকরির পেছনে না ছুটে তিনি যেন নিজেই একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারেন, আগামী যেকোনো বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের আওতায় আমরা তাকে অবশ্যই আনব আমরা।

দৈনিক অন্যধারা/ এইচ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here