জীবনের খেরোখাতা
আলী মুহাম্মদ লিয়াকত
অতীত আবছা, ভবিষ্যৎ আঁধার, বর্তমান দু’চারদিন,
কেমন ছিলাম কেমন আছি একটু জেনে নিন।
মায়ের জঠরে অতি আদরে ছিলেম তো বেশ ভালো,
জন্মেই অবাক, চারিদিক সবাক, চোখে ধরা দিল আলো।
নতুন জগতে, ভীত চকিতে, এদিক ওদিক দেখি,
মায়ের মুখের হাসিটা সেদিন কী অপূর্ব সেকি!
‘ওয়া ওয়া’ কান্না থামায় মা, দিয়ে মুখে তার বুক,
মায়ের বুকের শাল দুধে পেলাম ক্ষুধার প্রথম সুখ।
মায়ের কোলে আদর দোলে কত যে সুখে ছিলাম
কিছুদিন পরে নড়াচড়া করে হামাগুড়ি ধরা দিলাম
হামাগুড়ি শেষে হাটাহাটি শিখে পুতুল হলো যে সাথী,
এর কিছু পরে খেলাধুলা নিয়ে কত ছিল মাতামাতি।
পুুতুলের পরে এলো ফড়িং, তার সাথে প্রজাপতি
মার্বেল, লাটিম শেষে এলো ঘুড়ি উড়ানোর মতি।
হাতে খড়ি দিয়ে বর্ণ পরিচয়, লেখাপড়া হলো শুরু,
ফল ভালো করার চাপ দিতে থাকে মা, বাবা, শিক্ষাগুরু।
লেখাপড়া শেষে চাকুরী পেয়ে করলাম প্রেমের শাদী
বিয়ের পরে ছেলেপেলে হলে প্রেম হয়ে গেল তামাদি।
টানাটানির সংসার…
বৌ এর চাহিদা মিটাতে পারিনা,
কুলকিনারা খুজেও পাইনা,
ঘাটি টানা শুধু সার।
বউ শোনায় কথায় কথায়, কঠিন সে প্রবাদ
আমায় বিয়ে করে নাকি তার জীবন বরবাদ।
বয়স বেড়েছে, সময় কেড়েছে, জীবনে অনেক কিছু,
ডায়াবেটিস, বøাড প্রেসার, বাতব্যথা আছে পিছু।
চুল পেকেছে, টাক পড়েছে, দাঁতগুলো নড়োবড়ো
যৌবন ভেগেছে, কমনা কমেনি, তাই থাকি জড়োসড়ো,
মরতেই হবে, বাঁচাবেনা কেউ, যাবো নাতো কিছু নিয়ে
কলম চালাই, যদি কিছু পাই, যাবো সমাজকে দিয়ে।