পিল-কনডমের দাম বাড়ায় বিপাকে ৬৩ শতাংশ দম্পতি

অন্যধারা ডেস্ক :

আপনি যদি জন্মবিরতীকরণ পিল কিংবা কনডমের মতো পণ্যের ক্রেতা হন তাহলে এই ভুক্তভোগী হয়তো আপনিও। কারণ হঠাৎ করে দেশের বাজারে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত দাম বেড়েছে জন্মনিরোধ এসব সামগ্রীর। এতে জনস্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাবের শঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সংশ্লিষ্টরা।

কতটা বেড়েছে জন্মবিরতীকরণ পিল বা কনডমের দাম। বিক্রেতার জানান, প্যানথার ছিল আগে ১৫ টাকা এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়, ইউ এণ্ড মি ৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা, সেনশেসন ছিল ২৫ টাকা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এদিকে পিল আইটেমের মধ্যে ফেমিকন ৩২ টাকা থেকে বেড়ে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে দাম বাড়ার বিষয়ে ক্রেতারা জানান, এই পণ্যটা আমাদের জরুরি হওয়ায় দোকানি যা বলে তা দিয়ে কিনে নিয়ে চলে যাই। দাম নিয়ে দর কষাকষি করা হয় না। তবে ইদানিং দেখা যাচ্ছে এসব পিল-কনডমের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এছাড়া এটা আমাদের একটা মেন্ডটরি পণ্য হওয়ায় ব্যবহার বাদ দিতে পারি না।

তথ্য বলছে, দেশের প্রায় ৬৩ শতাংশ দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন। চাহিদার প্রায় অর্ধেক সরবরাহ করে বেসরকারি কোম্পানিগুলো। বাকি ৪৫ শতাংশ সরকার এবং ৫ শতাংশ সরবরাহ করে এনজিও।

২০২১ সালের আরবান হেলথ রিপোর্ট বলছে, ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী শহুরে নারীদের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করেন ৬০.৩ শতাংশ। এর মধ্যে অর্ধেকই ব্যবহার করেন পিল। ইনজেকশন ১০.৩ শতাংশ, কনডম ১১ শতাংশ এবং অন্যান্য পদ্ধতির ওপর নির্ভরর্শীল বাকি প্রায় ৯ শতাংশ।

বাজারে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের যোগানদার সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি বা এসএমসি। তাদের দাবি, চলমান বাস্তবতাতেই এমন সিদ্ধান্ত। সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি জিএম (মার্কেটিং) খন্দকার শামীম রহমান জানান, এসব পণ্যের দাম যখন গ্লোবাল মার্কেটে বেড়ে যায় এবং ডলারের দামও বেড়ে যায়। তখন আমরা বেশ কিছু দিন অপেক্ষা করেছি যে দামটা একই রেখে কোম্পানি কোনভাবে সাসটেইন করতে পারে কি না। কিন্তু সে কোনভাবে সম্ভব না হওয়ায় দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মূল্য বৃদ্ধি বাড়াবে অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ, তৈরি করতে পারে নারীর গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি। এছাড়া এতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার সরকারি উদ্যোগ বাঁধাগ্রস্ত হবে।

পপুলেশন সাইন্সের অধ্যাপক ড. মো. মঈনুল ইসলাম মনে করেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সুলভ বিরতণ নিশ্চিত করতে না পারলে জনসংখ্যা নিয়ে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ বাঁধাগ্রস্থ হবে। তিনি বলেন, এসডিজি অর্জনের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা পূরণে পরিবার-পরিকল্পনার ক্ষেত্রে অপূর্ণ চাহিদা পূরণ করতে হবে। এছাড়া সে চাহিদা ২০৩০ সালের মধ্যে শুন্যতে নিয়ে যেতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সরকারের নজরদারী আর প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকা, আনতে পারে ইতিবাচক পরিবর্তন।

 

খ.র

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here