বিড়াল হত্যার বিচার চাইতে থানায় কিশোরী

- Advertisement -
- Advertisement -

অনলাইন ডেস্ক

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে মৃত বিড়াল নিয়ে থানায় হাজির হয়েছে আছিয়া আক্তার (১৩) নামে এক কিশোরী। এ ঘটনায় রবিবার (৩০ অক্টোবর) বিকালে বিড়াল হত্যার অভিযোগে আছিয়ার মা আকলিমা আক্তার সিরাজদিখান থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

আছিয়া উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের ফুরশাইল গ্রামের মো. কালাম শেখের মেয়ে। আছিয়া আক্তার জানায়, ‘আমি ছোটবেলা থেকে এই বিড়ালটি লালনপালন করতাম। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে বিড়ালটিকে উত্তর ফুরশাইল গ্রামের মৃত সিরাজ মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা ও তার মেয়ে সেলিনা কাঠ দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। আহত বিড়ালটিকে নিয়ে আমি পশু হাসপাতালে যাই। পশু চিকিৎসক জানান বিড়ালটি মারা গেছে। পরে বিড়াল হত্যার বিচার চাইতে থানায় আসি আমি। কিন্তু পুলিশ প্রথমে আমাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করে। পরে আমার মায়ের কথায় তারা অভিযোগ নেয়। আমি বিড়াল হত্যার বিচার চাই।’

আছিয়া আক্তারের বাবা মো. কালাম মিয়া বলেন, ‘বিড়ালটি ঢাকার কাঁটাবন থেকে কিনে এনেছিলাম আমি। এতদিন ঢাকায় থাকতাম। চলতি মাসে বিড়ালটি নিয়ে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে আসি। যেহেতু ঢাকায় এতদিন বিড়ালটি আমাদের মতো ঘরবন্দি ছিল তাই গ্রামের বাড়িতে এনে ছেড়ে দিই। বিড়ালটি কোথাও ময়লা-আবর্জনা করে না। বাথরুম ধরলে আমাদের বাথরুমে যায়। সবার দেওয়া খাবার খায় না। শুধু মাছ-মাংস সিদ্ধ করে দিলেই খায়, না হয় খায় না। প্রতিবেশী তাসলিমার সঙ্গে জমি নিয়ে আমাদের বিরোধ রয়েছে। তার মেয়ে সকালে বলেছিল, বিড়ালটি মেরে ফেলবে। দুপুরে পিটিয়ে মেরে ফেললো। জমি নিয়ে বিরোধ আছে বলে একটি নিরপরাধ প্রাণীকে এভাবে পিটিয়ে হত্যা করবে কল্পনাও করিনি। এ ঘটনার বিচার চাই আমরা।

সিরাজদিখান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শবনম সুলতানা বলেন, ‘বিড়ালটিকে মৃত অবস্থায় আমাদের এখানে আনা হয়েছিল। তবে কীভাবে বিড়ালটির মৃত্যু হয়েছে তা ময়নাতদন্ত করে দেখবো আমরা। বিড়ালটিকে আমরা একটি ফ্রিজে রাখার জন্য বলেছি। সোমবার ময়নাতদন্ত করা হবে।’

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিরাজদিখান থানার এএসআই মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। বিড়ালটির ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজদিখান পশু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সিরাজদিখান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজগর হোসেন বলেন, ‘বিড়ালটি কীভাবে মারা গেছে তা আমরা এখনও নিশ্চিত নই। তবে খোঁজখবর নিয়ে জেনেছি, কালাম মিয়ার সঙ্গে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে প্রতিবেশী তাসলিমার। যেহেতু বিড়ালটিকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে সেহেতু তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে ‘দ্য ক্রুয়েলটি টু অ্যানিমেলস অ্যাক্ট ১৯২০’ বাতিল করে প্রাণিকল্যাণ আইন প্রণয়ন করে সরকার। এই আইনে বলা আছে, কোনও ব্যক্তি যদি প্রাণীকে ওষুধ অথবা বিষ মেশানো খাবার খাওয়ান বা বিষ প্রাণীর দেহে প্রয়োগ করেন, এ ধরনের কাজ করার চেষ্টা করেন বা করতে সহায়তা করেন এবং এতে প্রাণীর মৃত্যু বা স্থায়ী অঙ্গহানি অথবা স্বাভাবিক আকার ও কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়, তাহলে সেটা অপরাধ বলে গণ্য হবে। আইনে সাজা হিসেবে অনধিক ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার কথা বলা আছে। সর্বোচ্চ সাজা অনধিক দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান আছে বলে জানান।

দৈনিক অন্যধারা/ এইচ
- Advertisement -

আরো পড়ুুর