নাইমুল রাজ্জাক:
রাজধানী ঢাকায় শব্দদূষণ ক্রমবর্ধমানভাবে মারাত্মক আকার ধারণ করছে যা ভাবোদয়ের সৃষ্টি করছে। পুরো রাজধানী শহরই এখন শব্দদূষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।শহরের প্রায় সব এলাকাতেই শব্দের গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বিরাজ করছে।
শব্দদূষণ বলতে মানুষের বা কোন প্রাণীর শ্রুতিসীমা অতিক্রমকারী কোন শব্দ সৃষ্টির কারণে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনাকে বোঝায়।মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর শব্দদূষণের প্রভাব মারাত্মক হওয়ায় পরিবেশগত সমস্যা হিসেবেও পরিগণিত হচ্ছে।
বিশ্বস্বাস্থ্যসংস্থার ১৯৬৯ সালের গাইডলাইন অনুযায়ী,আবাসিক এলাকার জন্য শব্দের গ্রহণযোগ্যতা মাত্রা ছিল ৫৫ ডেসিবল,বাণিজ্যিক এলাকার জন্য ৭০ ডেসিবল। ২০১৮ সালে সর্বশেষ সড়কে শব্দের তীব্রতা ৫৩ ডেসিবলের মধ্যে সীমিত রাখার সুপারিশ করা হয়।যা কোন ক্ষেত্রেই মানা সম্ভব হচ্ছে না।ফলে শ্রবণ শক্তি হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চরক্তচাপ সৃষ্টি,হৃদরোগীর সংখ্যাও ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। দীর্ঘমেয়াদী শব্দদূষণে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সাথে সাথে পুরোপুরি বধির হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে চলেছে।
নেতিবাচকতা,স্মৃতিশক্তি হ্রাস,শিশুদের মানসিক চাপসৃষ্টি করছে।মানসিক চাপ সৃষ্টি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই মারাত্মক।মানসিক চাপ শিশুর সঠিক বিকাশ দান বাধাপ্রাপ্ত করছে।ফলে বৈকল্য সমাজের সম্ভবনা দেখা দিচ্ছে।
শব্দদূষণের রোধকল্পে যানবাহনের হাইড্রলিক হর্ন ব্যবহার নিযিদ্ধকরন,যত্রতত্র হর্ন বাজানো,শিল্পকলকারখানা অপরিকল্পিত অবস্থান,অধিক ভলিউমে গান বাজানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
মানসিক বৈকল্য জাতি বোধহয় কারোরই কাম্য নয়।সম্মিলিত উদ্যোগ শুধু এ সংকট থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারে।এ জন্য নির্দিষ্ট সুপারিশ বিধিমালা সংজ্ঞা অনুযায়ী চিহ্নিত করেএলাকা জোনভিত্তিক করতে হবে।যেসব এলাকায় শব্দদূষণের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি,সেসব এলাকায় নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে।
আসুন শব্দদূষণ রোধকল্পে শব্দদূষণ বিধিমালা মেনে চলি এবং সমন্বয় সাধনে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করি।
একটি সুস্থ দেশ, একটি সুস্থ সমাজ ভবিষ্যতের পথ আলোকিত করে।মানসম্মত জীবনযাপনের লক্ষ্যে শব্দদূষণকে দূরীভূত করে দেশ ও সমাজের আস্থাভাজন হয়ে উঠা একজন সুনাগরিকের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।