নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রথমে ফেসবুক পেজে ভারতীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের লোভনীয় শাড়ির বিজ্ঞাপন দিতেন। এরপর ক্রেতারা ছবির নিচে কমেন্টস করে পণ্যের দরদাম জানতে চান। পেজের অ্যাডমিন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কৌশলে ইনবক্সে আসতে বলেন। ইনবক্সে এসে পছন্দের শাড়ির মূল্য জানতে চান ক্রেতা। মূল্য নির্ধারণ করে অগ্রিম কিছু টাকা পাঠাতে বলা হয় গ্রাহককে। এরপর গ্রাহক ওই শাড়ির জন্য নির্ধারিত অগ্রিম টাকা পাঠিয়ে দিতেন। টাকা দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই ফোন যেত গ্রাহকের নম্বরে। বলতেন আমি শাড়ি নিয়ে এসেছি। আপনি পেজে দেওয়া নম্বরে ফোন করে প্রোডাক্টের কোড নম্বরটা নিয়ে আমাকে জানান। গ্রাহক পেজের নম্বরে ফোন করলে কাজল ফোন ধরে বলতো অর্ডারের বকেয়া টাকা পরিশোধ করুন কোড নম্বর পেয়ে যাবেন। গ্রাহক তখন সরল বিশ্বাসে পুরো টাকা পরিশোধ করতো। এরপরই শুরু হতো গ্রাহকের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার আর ফেসবুকে ব্লক। এভাবেই অসংখ্য সহজ-সরল অনলাইন ক্রেতাদের ঠকিয়ে আসছিল তারা। ঈদ উপলক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিয়ে ভারতীয় শাড়ি বিক্রির নামে অগ্রিম টাকা নিয়ে প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। এ অভিযোগে চক্রটির এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর অর্গানাইজড ক্রাইম ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ বিভাগ। মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসা দম্পতিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআইয়ের ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সাগর সরকার। গ্রেফতাররা হলেন, মোছা. জান্নাতুল ফেরদৌস (২৮) ও তার স্বামী খায়রুজ্জামান (৩৭)। প্রতারণায় ব্যবহৃত সাতটি মোবাইল, ফেসবুক পেজ ও বিকাশ অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়।এএসপি সাগর বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কোনো শাড়ি সরবরাহ না করেই মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে আসছিলো এই দম্পতি। জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে কাজল পেশায় গৃহিনী। কাজল বাসায় বসে অনলানে অর্ডার নেয়। অর্ডার গ্রহণের সময়ে শাড়ির মূল্যের একটি অংশ অগ্রিম নিয়ে নেয়। এরপর তার স্বামী খায়রুজ্জামান ডেলিভারিম্যান সেজে শাড়ি অর্ডারদাতাকে ফোন করে বলতেন তিনি আপনার বাসার কাছে আছে। ‘তারা গত পাঁচ মাস ধরে প্রতারণা করে আসছিল। তাদের সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে। এই দম্পতি শুধুমাত্র রমজানের শুরু থেকে প্রতিদিন অন্তত ১৫ হাজার টাকা হাতিয়ে আসছিলো। কিন্তু তাদের কাছে কোনো ধরনের শাড়ি বা অন্য কোনো পণ্য ছিলো না। কাজলের স্বামী নিউ মার্কেট থানায় অপর একটি প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার হয়েছিল। ’সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘তাবিহা শাড়ি হাউস’ নামে একটি পেজ খুলে অল্প দামে ভারতীয় শাড়ি বিক্রির নামে প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। চক্রের মূলহোতা গ্রেফতার দম্পতি। তারা অভিনব কৌশলে প্রতারণা করে আসিছলো। সম্প্রতি এক নারীর কাছ থেকে শাড়ি বিক্রির নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় একটি মামলা হয়, সেই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
দৈনিক অন্যধারা // এইচ