হামজা চৌধুরী :প্রেম, পরিবার ও বাংলাদেশের জন্য তার ত্যাগ

- Advertisement -
- Advertisement -

মুহাম্মদ আবু আদিল, বিশেষ প্রতিনিধিঃ বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে অনেক খেলোয়াড়ই রয়েছেন, যারা দেশপ্রেমের টানে নিজ শিকড়ে ফিরে এসেছেন। তেমনই এক নাম হামজা চৌধুরী। ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগে খেলা এই ফুটবলার যখন বাংলাদেশের জাতীয় দলে খেলার সিদ্ধান্ত নেন, তখন অনেকেই বিস্মিত হন। কিন্তু তার জীবন গল্প শুধু মাঠের পারফরম্যান্সে সীমাবদ্ধ নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ভালোবাসা, আত্মত্যাগ ও পরিবার গঠনের এক অনন্য অধ্যায়।

ভালোবাসার টানে ধর্ম পরিবর্তন ও বিয়ে

মাত্র ১৫ বছর বয়সে প্রেমে পড়েন হামজা। ১৭ বছর বয়সে তিনি তার ভালোবাসার মানুষটিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তবে একটি বড় বাধা ছিল—মেয়েটি ভিন্নধর্মী,হামজা বিষয়টি তার বাবার কাছে প্রকাশ করলে, তিনি মেয়েটির সঙ্গে কথা বলতে চান।

পরবর্তী সময়ে লেস্টারের সেন্ট্রাল মসজিদে মেয়েটি ইসলাম গ্রহণ করে এবং সেখানেই তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।সে সময় হামজা একজন প্রতিষ্ঠিত ফুটবলার ছিলেন না, বয়সও মাত্র ১৮। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে নিজের জায়গা করে নেন, প্রতিষ্ঠিত ফুটবলার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

আজ হামজার বয়স ২৭, তার সংসারে রয়েছে তিনটি সন্তান। তার স্ত্রী এখন নিয়মিত ধর্ম পালন করেন।

বাংলাদেশের জন্য তার আত্মত্যাগ

এই গল্প যদি এখানেই শেষ হতো,তবে এটি নিছকই একটি প্রেমকাহিনি থেকে যেত। কিন্তু হামজার আসল গল্প শুরু হয় তখন, যখন তিনি বাংলাদেশের জাতীয় দলে খেলার সিদ্ধান্ত নেন।

হামজা এমন একজন ফুটবলার, যিনি ইংল্যান্ডের অন্যতম শীর্ষ লিগে খেলেন এবং প্রতি মাসে কোটি টাকার বেশি উপার্জন করেন। তার একটি সুখী পরিবার আছে, তিনটি সন্তান আছে, বাবা-মা আছেন।

এত কিছুর পরেও তিনি বাংলাদেশের হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নিলেন। অথচ এই সিদ্ধান্ত তার ক্যারিয়ারে কোনো নতুন মাত্রা যোগ করবে না, তার আর্থিক লাভও খুব একটা নেই। তার একমাত্র প্রেরণা,বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।

হামজার যাত্রা : আত্মত্যাগের উদাহরণ

মাত্র একদিন আগেও হামজা ইংল্যান্ডের ঠাণ্ডায় (৩° সেলসিয়াস) পুরো ৯০ মিনিট ফুটবল খেলেছেন। এরপর দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন এবং বর্তমানে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন, যেখানে তাপমাত্রা ২৮°।আবহাওয়ার এমন পরিবর্তন একজন পেশাদার খেলোয়াড়ের জন্য কতটা কঠিন, তা সহজেই অনুমেয়।

আমাদের করণীয়

হামজা চৌধুরীর মতো একজন ফুটবলার যখন নিজের ক্যারিয়ারের কথা না ভেবে, শুধুমাত্র দেশপ্রেম ও ভালোবাসার টানে বাংলাদেশে আসেন,তখন আমাদের দায়িত্ব তার আত্মত্যাগকে সম্মান জানানো।

- Advertisement -

আরো পড়ুুর