তালেবানদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নিয়ে রয়েছে মতভেদ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
তালেবানরা কাবুল দখলের পর যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির মিত্ররা এখনও আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সামরিককর্মীদের ফেরত নেওয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা উত্তর খুঁজছেন তালেবানের এত দ্রুত উত্থান ও দেশ দখল করতে পারার কারণ কী। আলোচনা হচ্ছে, দেশ তো দখল করলো তারা, এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি কি পাবে তারা?
শুরুতে ধারণা করা হয়েছিল আফগানবাহিনীর বিরুদ্ধে তালেবানের পেরে ওঠার কোনও সুযোগ নেই। কারণ আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীতে সদস্য সংখ্যা ২ লাখ ৩০ হাজার বলে মনে করা হয়েছিল। কয়েকজন বিশেষজ্ঞ এখন বলছেন, দুর্নীতিগ্রস্ত আফগান নেতা ও সামরিক কর্মকর্তারা সেনাদের প্রশিক্ষণের টাকা নিজেদের পকেটে ভরেছেন। এছাড়া আফগানবাহিনীর দুর্বল সামরিক পরিকল্পনা, অক্ষমতা ও তালেবানের সফল কৌশলে কাবুলের পতন হয়েছে। বেজিন-সাদ্দাত সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সামরিক বিশেষজ্ঞ ড. ইয়াদো হেখট বলেন, প্রথম স্বীকৃতি দেওয়া দেশ হতে পারে চীন ও পাকিস্তান। কারণ আফগানিস্তানের সঙ্গে তাদের সীমান্ত রয়েছে এবং সরাসারি প্রভাবিত হবে। চীনের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তালেবানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে স্বাগত জানাবে তারা। চীনের উইঘুর মুসলিম বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে তালেবানের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতির পর এমন ঘোষণা দেয় বেইজিং। প্রায় একই ধরনের অবস্থান নিয়েছে পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ। এর আগে ইসলামাবাদ তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহের কথা জানিয়েছিল।
হেখট বলেন, অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে আমি মনে করি বিষয়টি তালেবানের আচরণের ওপর নির্ভর করছে। এছাড়া রাষ্ট্রীয় ও অনানুষ্ঠানিক স্বীকৃতির পার্থক্য রয়েছে। তালেবান যদি স্থিতিশীল শাসন জারি করতে পারে তাহলে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিতে অনাগ্রহী দেশগুলো নিজেদের স্বার্থে অনানুষ্ঠানিক স্বীকৃতির পথে হাঁটতে পারে। এই বিশেষজ্ঞ জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এমনটি হতে পারে। ওয়াশিংটন আশঙ্কা করছে দেশটি সন্ত্রাসবাদে ঘাঁটিতে পরিণত হতে পারে। মস্কোর উদ্বেগের জায়গা হলো দেশটির অস্থিতিশীলতা উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানে ছাড়িয়ে রাশিয়ায় প্রবেশ করতে পারে। ইরানও একই পথে হাঁটতে পারে। আফগানিস্তানের শিয়া সম্প্রদায়ের প্রতি তালেবানের আচরণে নজর রাখবে তেহরান। এই আচরণ তেহরানের মিত্র লেবাননের হিজবুল্লাহ-এর সম্পর্কেও প্রভাব ফেলবে। বেখট বলেন, ইরান সমর্থিত শিয়া সংগঠন হওয়ার কারণে ইরান-তালেবান সম্পর্ক দ্বারা প্রভাবিত হবে হিজবুল্লাহ। ইরান ও তালেবানের সম্পর্ক বিরূপ হলে আমরা লেবানন, সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেনে আমরা আরও বেশি ইরানি তহবিল দেখতে পাবো।

অন্যধারা/ ২০ আগস্ট, ২০২১/ দ ম দ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here