২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় রক্তাক্ত হয়েছিল আওয়ামী লীগ

অন্যধারা ডেস্ক : ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা বাংলাদেশে ২০০৪ সালে ঢাকায় আওয়ামী লীগের এক জনসভায় এক ভয়াবহ হামলা, যে হামলায় ২৪ জন নিহত হয় এবং তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা সহ প্রায় ৩০০ লোক আহত হয়। এই হামলায় নিহতদের মধ্যে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নারী নেত্রী মিসেস আইভি রহমান অন্যতম, যিনি বাংলাদেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তিপূর্ণ সমাবেশে চালানো হয় নজির বিহীন গ্রেনেড হামলা। আক্রান্ত হন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ওই ঘটনায় হত্যা, হত্যা চেষ্টা, ষড়যন্ত্র, ঘটনায় সহায়তাসহ বিভিন্ন অভিযোগে একটি মামলা যাতে আসামি সংখ্যা মোট ৫২ জন। একই ঘটনায় ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনে (সংশোধনী-২০০২) অপর একটি মামলায় আসামি সংখ্যা ৩৮জন।

ওই ঘটনায় হত্যা, হত্যা চেষ্টা, ষড়যন্ত্র, ঘটনায় সহায়তাসহ বিভিন্ন অভিযোগে আনা মামলায় ৫২জন আসামি হচ্ছেন-১. মুফতি আবদুল হান্নান ওরফে আবুল কালাম ওরফে আব্দুল মান্নান (অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর) ২. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে অভি ৩. শরিফ শাহেদুল আলম বিপুল (অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর) ৪. মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর ৫. আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল ৬. মো. জাহাঙ্গীর আলম ৭. হাফেজ মাওলানা আবু তাহের ৮. শাহাদাত উল্লাহ ওরফে জুয়েল ৯. হোসাইন আহম্মেদ তামিম ১০. আব্দুস সালাম পিন্টু ১১. মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন ওরফে খাজা ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ ১২. আরিফ হাসান ওরফে সুমন ওরফে আবদুর রাজ্জাক ১৩. রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ১৪. মো. উজ্জল ওরফে রতন ১৫. হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া ১৬. মো. লুৎফুজ্জামান বাবর ১৭. মেজর জেনারেল (অব:) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী ১৮. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আব্দুর রহিম ১৯. আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ (অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর) ২০. মাওলানা শেখ আব্দুস সালাম ২১. মো. আব্দুল মাজেদ ভাট ২২. আব্দুল মালেক ওরফে গোলাম মোহাম্মদ ২৩. মাওলানা আব্দুর রউফ ওরফে পীর সাহেব ২৪. মাওলানা সাব্বির আহমেদ ওরফে আব্দুল হান্নান সাব্বির ২৫. মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, ২৬. অবসরপ্রাপ্ত আইজিপি মো: আশরাফুল হুদা ২৭. অবসরপ্রাপ্ত আইজিপি শহুদুল হক ২৮. অবসরপ্রাপ্ত আইজিপি খোদা বক্স চৌধুরী ২৯. রুহুল আমীন, বিশেষ পুলিশ সুপার (অব:) ৩০. আব্দুর রশিদ অবসরপ্রাপ্ত এএসপি ৩১. মুন্সী আতিকুর রহমান অবসরপ্রাপ্ত এএসপি ৩২. লে.কমান্ডার সাইফুল ইসলাম ডিউক ৩৩. মাওলানা মো.তাজউদ্দিন ৩৪. মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন ৩৫. আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন ৩৬.মো. খলিল ৩৭. জাহাঙ্গীর আলম বদর ৩৮. মো.ইকবাল ৩৯. আবু বক্কর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার ৪০. লিটন ওরফে মাওলানা লিটন ৪১. তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া ৪২. হারিছ চৌধুরী ৪৩. কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ ৪৪. হানিফ পরিবহনের মালিক হানিফ ৪৫. লে.কর্নেল (অব: ) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার ৪৬. মেজর জেনারেল এ,টি,এম, আমিন (এলপি আর) ৪৭. মুফতি শফিকুর রহমান ৪৮. মুফতি আব্দুল হাই ৪৯. রাতুল আহাম্মদ বাবু ওরফে রাতুল বাবু ৫০. ডিআইজি, খান সাঈদ হাসান ৫১. পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান খান ৫২. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ কমিশনার। (উইকিপিডিয়া)

সেদিন ঘটনাস্থলেই ১৬ জন নিহত এবং চার শতাধিক আহত হন। পরে মারা যান আইভি রহমানও। মেয়র হানিফের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় অস্ত্রোপচার করার কথা থাকলেও গ্রেনেডের স্প্লিন্টার শরীরে থাকায় তা আর করা সম্ভব হয়নি। পরে তিনি থাইল্যান্ডের ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সব মিলিয়ে ন্যক্কারজনক এ হামলায় ২৪ জনের প্রাণহানি হয়।

নিহত অন্যরা হলেন শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রহমান, হাসিনা মমতাজ, রিজিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), রতন শিকদার, মোহাম্মদ হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, মোশতাক আহমেদ, লিটন মুনশি, আবদুল কুদ্দুছ পাটোয়ারী, বিল্লাল হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন শিকদার, আতিক সরকার, মামুন মৃধা, নাসিরউদ্দিন, আবুল কাসেম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, আমিনুল ইসলাম, জাহেদ আলী, মোতালেব ও সুফিয়া বেগম।

গ্রেনেড হামলার সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন জিল্লুর রহমান (প্রয়াত রাষ্ট্রপতি), আমির হোসেন আমু, আব্দুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, আবদুল জলিল, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরউল্লাহ, মোহাম্মদ হানিফ ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াসহ আরও কয়েকজন নেতা। আর ট্রাকের পাশেই নিচে ছিলেন ওবায়দুল কাদের, সাবের হোসেন চৌধুরীসহ দলের অন্যান্য নেতারা।

অন্যধারা/সাগর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here