কাশফুলের শুভ্রতা ছড়াচ্ছে মুগ্ধতা

অন্যধারা ডেস্ক : শরৎ ঋতুর কথা মনে এলেই আমাদের চোখের কোণে ভেসে উঠে ফুটন্ত সাদা কাশফুল, পাল তোলা নৌকার সারি, দূর আকাশের কোণে জমে থাকা সাদা মেঘের মিটিমিটি হাসি যেন শুভ্রতা ছড়াচ্ছে চারদিকে। কখনো মিষ্টি রোদে আলোর খেলা আবার কখনো হঠাৎ বৃষ্টির হানা। কখনো কালো মেঘে আবার কখনো সাদা মেঘের আভরণে লুকিয়ে হাসছে সোনালী সূর্য।

কাশফুল মূলত ছন গোত্রীয় এক ধরনের ঘাস। নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো রুক্ষ এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের কোনো উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে। তবে নদীর তীরেই এদের বেশি জন্মাতে দেখা যায়।  শরৎ ঋতুতে সাদা ধবধবে কাশফুল ফোঁটে। বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই কাশফুল দেখতে পাওয়া যায়। কাশফুল পালকের মতো নরম এবং রঙ ধবদবে সাদা। 

বাংলা সাহিত্যে শরৎ ও কাশফুলের কথা এসেছে নানাভাবে। শরৎ ও কাশফুলের বন্দনা করা হয়েছে কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায়-

কাশফুল মনে সাদা শিহরণ জাগায়, মন বলে কত সুন্দর প্রকৃতি, স্রষ্টার কি অপার সৃষ্টি।

রবীন্দ্রনাথ প্রাচীন গ্রন্থ কুশজাতক কাহিনী অবলম্বন করে শাপমোচন নৃত্যনাট্য রচনা করেছেন।

কবি জীবনানন্দ দাশ শরৎকে দেখেছেন এভাবে- বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর।

মহাকবি কালিদাস শরৎ বন্দনায় বলেছিলেন প্রিয়তম আমার, ঐ চেয়ে দেখ, নব বধূর ন্যায় সুসজ্জিত শরৎ কাল সমাগত। তিনি ‘ঋতুসংহার’ কাব্যে আরও লিখেছেন ‘কাশ ফুলের মতো যার পরিধান, প্রফুল্ল পদ্মের মতো যার মুখ, উন্মত্ত হাঁসের ডাকের মতো রমণীয় যার নূপুরের শব্দ, পাকা শালি ধানের মতো সুন্দর যার ক্ষীণ দেহলতা, অপরূপ যার আকৃতি সেই নববধূর মতো শরৎকাল আসে।

সাদা কাশফুলের মঞ্জরি ১৫ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার লম্বা। ঘাসের জ্ঞাতি কাশ হয় তিন মিটার পর্যন্ত লম্বা। ঘাসের মতোই এর মূল গুচ্ছ। পাতা রুক্ষ ও সোজা রেখার মতো। লম্বায় আধা থেকে এক মিটার আর চওড়া ছয় থেকে ১৫ মিলিমিটার।

ঢাকার উপকণ্ঠে বালুকাময় জল উপকূলে ফুটেছে রাশি রাশি কাশফুল। রাজধানী ঢাকার আশপাশ যেমন- দিয়াবাড়ী, ৩০০ ফিট সড়ক, আফতাবনগর, কেরানীগঞ্জের হযরতপুরের কালিগঙ্গা নদীর তীর, ঢাকা-মাওয়া সড়কের কুচিয়ামারা ও ধলেশ্বরী নদীর তীর, মায়াদ্বীপ ও মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় নানাপ্রান্তে শ্বেতশুভ্র কাশফুল এখন নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়ে যাচ্ছে।

অন্যধারা/সাগর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here