অন্যধারা ডেস্ক
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ঈদের ছুটির আনন্দে স্কুলে জরি-চুমকি নিয়ে খেলা করায় ১৬ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করে বরখাস্ত হয়েছেন ছাত্রী ধর্ষণ মামলার আসামি ও স্কুলের বাংলার শিক্ষক জসিম উদ্দিন। এ ঘটনায় তানজিলা আক্তার (১৪) ও সামিয়া সিমি নিশী (১৪) নামে সপ্তম শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাদেরকে স্থানীয় ইউএসবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন স্কুলের শিক্ষকেরা। বর্তমানে তারা হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শনিবার (২ জুলাই) দুপুরে উপজেলার তারাবো পৌরসভার বরপা হাজী নুর উদ্দিন ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রোববার (৩ জুলাই) জসিম উদ্দিনকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক জওহর লাল বাবু জানিয়েছেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করে শিক্ষকের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে একই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা রয়েছে। সেই মামলায় ২০১৮ সালের শেষের দিকে জেল থেকে জামিনে বের হলে স্কুল কমিটি তাকে পুনর্বহাল করে। শিক্ষার্থী সামিয়া সিমি নিশীর মা বিউটি আক্তার জানান, স্কুলের ঈদকালীন ছুটি উপলক্ষে শনিবার দুপুরে বিভিন্ন ক্লাসের শিক্ষার্থীরা চুমকি মেখে আনন্দ করছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক জসিম উদ্দিন দুটো বেত দিয়ে পিটিয়ে বিভিন্ন শ্রেণির ১৬ জন শিক্ষার্থীকে আহত করেন। এদের মধ্যে তার মেয়ে নিশী এবং নিশীর সহপাঠী তানজীলাকে মেঝেতে ফেলে এলোপাথাড়ি লাঠি দিয়ে মারেন ওই শিক্ষক।
উভয় শিক্ষার্থী এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরা তাদেরকে স্থানীয় ইউএসবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান বলে জানান তিনি। এদিকে এই নির্যাতনের ঘটনায় শিক্ষক জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আহত শিক্ষার্থী নিশীর মা বিউটি আক্তার। স্থানীয়রা জানান, শিক্ষক জসিম উদ্দিন ২০১৭ সালে মার্চ মাসে একই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে অপহরণের পর ধর্ষণ করার অভিযোগে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় ২০১৮ সালে জেল থেকে জামিনে বের হয়ে পুনরায় শিক্ষকতা শুরু করেন জসিম উদ্দিন। ধর্ষণ মামলার আসামি কীভাবে স্কুলে শিক্ষকতা করছেন, প্রধান শিক্ষককে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, স্কুল কমিটির সভাপতি হাসিনা গাজী সবকিছু জেনেও জসিম উদ্দিনকে শিক্ষক পদে পুনর্বহাল করেন বলে তিনি জানান।
দৈনিক অন্যধারা/ এইচ