জাতি শোকাহত- সাজেদা ডুলু

জাতি শোকাহত
সাজেদা ডুলু

সেদিন আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন
গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়ছে
প্রকৃতি নিরব নিস্তব্ধ!
পরম শান্তিভরে ঘুমুচ্ছিলেন জনদরদী
মসজিদ থেকে আযানের ধ্বণী ভেসে আসে
ফজরের নামাজ শেষ করতেই
বাইরে হট্টোগোল, গুলির শব্দ!
ত্রস্ত পায়ে তিনি অফিস কক্ষে ঢুকেন
টেলিফোন হাতে নিতেই কামানের গুলি জানালার
কাঁচ ভেঙে দেয়াল ভেদ করে!
সাড়ে সাতকোটি বাঙালির জানা হোল না
তাঁদের পিতা কেমন আছেন?
নরপশুরা মাতা ফজিলাতুন্নেছা সহ সকল পরিবার
পরিজনকে নির্মম ভাবে হত্যা করলো
ছোট্ট খোকন রাসেলের রক্তমাখা তুলতুলে দেহটা
মাটিতে লুটিয়ে পড়ে!
উহ্ কি হৃদয় বিদারক মুহুর্ত!
যাঁর বজ্রকন্ঠে সাড়েসাত কোটি বাঙালি
স্বাধীনতা অর্জনে ঝাপিয়ে পড়েন
তাঁকে মানুষরূপি হায়েনারা আঠারো টি গুলি ছুড়ে
বুকটা ঝাঁঝরা করে দিল!
ভোর পাঁচ টা দশ মিনিট ৩২ নং বাড়ির সিঁড়ি তে
বাঙালির জাতির পিতা তাজারক্ত মাখা নিষ্প্রাণ
দেহে শুয়ে পড়লেন!
রক্তলাল স্রোত প্রবাহিত হোল বঙ্গোপসাগরে অথৈ ঢেউয়ে
সবুজ শস্য শ্যামল বাংলা আবৃত হোল সাদা কফিনে
পবিত্র তাজারক্ত শ্রাবণী বর্ষায় আর্তনাদ করে
আকাশ পাতাল ফুঁড়ে ধ্বনীত হয়
জয় বাংলা!
বাংলার অবুঝ আবাল বৃদ্ধ বনিতা শুধায়
বঙ্গবন্ধু কি পাইলেন জীবনের সার্থকতা?
প্রবাহিত বাতাস প্রবল ধাক্কায় জানান দিল
চেয়েদেখ বাঙালি ঘাতকেরা ঝুলছে ফাঁসিরকাষ্ঠে
ওদের মৃতদেহ শিয়াল কুকুর স্পর্শ করবে না ঘৃণাভরে।
পৃথিবী যতদিন রইবে, বাঙালি জাতি মহাননেতা কে
রাখবে হৃদয় জুড়ে।
হে জাতির পিতা তুমি বাঙালির অহংকার
তুমি পথপ্রদর্শক, তুমি মৃত্যুঞ্জয়ী, তুমি বিজয়ী।

অন্যধারা/সাগর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here