ফেনীতে বন্যার পরিস্থিতির অবনতি, খাবার-পানির জন্য হাহাকার

অন্যধারা প্রতিবেদক:

ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে ভাসছে ফেনী। বুধবার (২১ আগস্ট) থেকে ডুবে রয়েছে শহরসহ জেলার গ্রামাঞ্চলের ঘরবাড়ি। কোনো কোনো এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করলেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। দৃশ্য হচ্ছে বন্যার ক্ষত। বেশিরভাগ এলাকা এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।

বিদ্যুৎ ও মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক না থাকায় কেউ কারোর খোঁজ নিতে পারছেন না। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নৌকা, স্পিডবোট নিয়ে এলেও প্রবল স্রোত ও রাস্তাঘাট চেনাজানা না থাকায় উদ্ধার কাজ চলছে ধীরগতিতে। তবে সেনাবাহিনী, বিজিবি হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার অব্যাহত রেখেছে।
“দৃশ্যমান হচ্ছে বন্যার ক্ষত, খাবার-পানির জন্য হাহাকার”

সরেজমিন দেখা গেছে, শহরের এসএসকে সড়ক, ট্রাংক রোড, মিজান রোড থেকে পানি নেমে গেছে। পুরাতন জেল রোড, কলেজ রোড, মিজান রোড, ক্যাডেট কলেজ রোড, ডাক্তারপাড়া, মাস্টারপাড়া, রামপুর, পুরাতন পুলিশ কোয়ার্টার, শাহীন একাডেমি এলাকা, চাঁড়িপুর, বিরিঞ্চি, বনানীপাড়াসহ প্রায় সব এলাকা পানিতে তলিয়ে রয়েছে। সদরের ১২ ইউনিয়নের ১০৮টি ওয়ার্ডের সব এলাকা পুরোপুরি বন্যাকবলিত।

পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী উপজেলায় পানি কমলেও রাস্তাঘাট ভেঙে যাওয়ায় পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না। দাগনভূঞা ও সোনাগাজী উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা ডুবে গেছে। সরকারি আশ্রয়ণকেন্দ্র ছাড়াও লাখ লাখ মানুষ স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদরাসা বা উঁচু ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী পরশুরাম পৌরসভার সীমান্ত এলাকা বাউরপাথর, সলিয়া, অনন্তপুর, চিথলিয়া ইউনিয়নের চিথলিয়া, অলকা, নোয়াপুর, ধনিকুন্ডা, দুর্গাপুর, মির্জানগর ইউনিয়নের কাউতলী, চম্পকনগর, বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের সাতকুচিয়া গ্রামে জলাবদ্ধতার পর থেকে খাবার পাচ্ছেন না বাসিন্দারা।

একইভাবে ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর, বাঘাইয়া, সাতসতি, ইজ্জতপুর, মোটবী, গঙ্গানগর, ফাজিলপুর ইউনিয়নের শিবপুর, বটতলি এলাকায় কোনো ধরনের খাবার পৌঁছেনি। তবে শহরতলি ও মহাসড়কের আশপাশের গ্রামগুলোতো কিছু খাবার গেছে।

জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার জানান, কিছু এলাকায় পানি নামতে শুরু করলেও সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস এবং ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এরইমধ্যে এক হাজার ৬০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ফেনীতে সাড়ে ৫০০ টন চাল এবং ১০ লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় হতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

অন্যধারা/২৪/০৮/২০২৪

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here