ছবি: পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জোবায়দুল হক। (সংগৃহীত)
‘ভোট হবে ইভিএমে, কে কোথায় ভোট দেবে তা কিন্তু আমাদের কাছে চলে আসবে। এমনই এক মন্তব্য করেন পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জোবায়দুল হক ওরফে রাসেল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওচিত্রে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) উপ-নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে উঠান বৈঠকে ইভিএম নিয়ে আওয়ামী লীগের এক নেতার এমন বক্তব্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
শনিবার (২৩ জুলাই) স্থানীয় তাঁতেরকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এলাকায় ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে একটি উঠান বৈঠকে অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগ নেতা জোবায়দুল ইভিএম নিয়ে এ বিতর্কিত মন্তব্যটি করেন। এ সময়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইব্রাহিম ফারুক তার পাশে বসা ছিলেন।
শুক্রবার (২২ জুলাই) বিকেলে উক্ত ইউনিয়নের ধানদী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এক সভায় পুলিশ প্রশাসনের সামনেই ভোটারদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন জোবায়দুল। সেখানে তিনি বলেন, ‘যাঁরা নৌকায় ভোট দেবেন, তাঁরাই কেবল ভোটকেন্দ্রে যাবেন।’ এ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান ওরফে ভিপি মান্নান।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারাও জোবায়দুলের ইভিএম নিয়ে এই বিতর্কিত বক্তব্য মেনে নিতে পারছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, ‘যে বক্তব্য দিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চায়, সেই বক্তব্য যদি আওয়ামী লীগ নেতারা দেয়, তাতে সরকার তথা আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়। মুখে লাগাম দিয়ে কথা বলা প্রয়োজন।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবি শাহানুর খান জানান, জোবায়দুল হকের বিরুদ্ধে ইভিএম নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্যের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সোমবার রাত থেকে এলাকায় বহিরাগত কেউ অবস্থান করতে পারবেন না। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচনের ধারায়।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি নাজিরপুর ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আমির হোসেন ব্যাপারী নির্বাচিত হলেও তিনি শপথ নেওয়ার আগেই ১৯ ফেব্রুয়ারি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এবং একই ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান ৩ মার্চ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যাওয়ায় শূন্য পদ দুটিতে উপ-নির্বাচন হচ্ছে। উপ-নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে আগামী ২৭ জুলাই। এতে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ছয়জন প্রার্থী। আর ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্যপদে লড়ছেন ২ জন প্রার্থী।
দৈনিক অন্যধারা/২৪ জুলাই ২০২২/জ কা তা