বাংলাদেশের তরুণ সমাজকর্মী ও সাংবাদিক মুহাম্মদ আবু আবিদ আজ তার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক একাউন্টে খোলা চিঠির মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর মেয়র ডাঃ শাহাদাত হোসেনকে নগরীর হালিশহর এলাকায় ১ ঘন্টা রিক্সা ভ্রমনের অনুরোধ জানান। খোলা চিঠিতে মুহাম্মদ আবু আবিদ লিখেন, “আসসালামু আলাইকুম , আপনার উদ্দীপ্ত পথ চলা ও সক্রিয় কর্মকৌশল আমাকে এই চিঠি লেখার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। আপনার সাথে আমার ২০১৯ সাল থেকে ব্যক্তিগত পরিচয় থাকলেও এখানে চিঠি লেখার কারণ হল- ভবিষ্যৎ এ চিহ্নিত সমস্যাগুলো নিয়ে সচেতন নাগরিকরা যেন ফেসবুক-কে জানানোর একটা মাধ্যম হিসেবে বেঁছে নেয়। তাই ব্যক্তিগতভাবে না বলে সবার সামনে এই খোলা চিঠির নিবেদন… হালিশহর আমার জন্মস্থান। ঢাকার যান্ত্রিকতা জীবন শেষে ছুটিতে যখন হালিশহর আসি, তখন রিকশায় করে এলাকা ঘুরি। এলাকায় ঘুরাফেরায় করতে যেয়ে আমাকে ঢাকার অধিকাংশ অর্থোপেডিক ডাক্তারাই এখন চেনে। ২৩ বছর বয়সে আমি এখন ভীষণ ব্যাকপেইন এর রোগী। এসব আপনাকে বলার কারণ হল- হালিশহরের বেহাল রাস্তা। আপনাকে বিনয়ের সাথে স্মরণ করিয়ে দেই, আমার লাইভ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে আপনি বলেছিলেন মেয়র হলে সবার আগে আপনি চট্টগ্রামে সরকারি প্রতিষ্ঠান সমন্বয় করে জলাবদ্ধতা নিরসন ও হঠাৎ রাস্তা কাটাকাটি বন্ধ করবেন।”
মুহাম্মদ আবু আবিদ আরও লিখেন, “চট্টগ্রামে হালিশহর নিরীহ মানুষের এলাকা বলেই হয়তো বিভিন্ন প্রকল্পে গিনিপিগের মতো ব্যবহার করা হয়। সুয়ারেজ প্রকল্পের নামে হালিশহরের প্রতিটা রাস্তা ওপেন হার্ট সার্জারী করা হয়েছে। পুরোদিন রাস্তার মোড়ে মোড়ে যানযট লেগে থাকে। বিশেষ করে দিন আনা-দিন খাওয়া অটোরিকশা চালকদের ঘাড়ে দোষ চাপালেও প্রকৃত সমস্যার মূল হলো এই অদক্ষ ও অগোছালো প্রকল্প বাস্তবায়ন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বিশাল করে চারদিক থেকে টিনের বেড়া দিয়ে মাসের পর মাস আটকিয়ে রাখাটাই রাস্তার বেহাল অবস্থার জন্য মূল দায়ী। আমার খুব জানতে ইচ্ছা হয়, মেশিন রাখার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারণ না করে রাস্তার বড় একটা অংশ এভাবে গ্যারেজ বানানোর অনুমতি কি প্রকল্পে ছিল? তাও এমন চালহীন বিশাল ঘর বানাতে রাস্তার সব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোই নির্ধারণ করেন তারা। কি অদ্ভুত! হালিশহরবাসীর কপালটা একবার ভাবুন, পুরোদিন রোলার কোস্টারের অনুভূতি পেয়ে, যানযট উপেক্ষা করে তীব্র ব্যাকপেইন এর ব্যথা সহ্য করে একটু ঘুমানোর চেষ্টা করতে যাবে, ওমনি রাতে শুরু হয় রাস্তা কাটা মেশিনের বিকট শব্দ। কি বিভৎস জীবন পার করছে, তারা একবার ভাবুন। সমাধান কী, আমি জানি না। কিন্তু আপনার কাছে বিনীত অনুরোধ—আপনি একবার রিকশায় হালিশহরের অলিগলি ঘুরে দেখুন। বাস্তবতা অনুভব করুন। আমি বিশ্বাস করি, আপনি নিজেই কোনো না কোনো সমাধানের পথ খুঁজে বের করবেন। এই মুহূর্তে উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতে সমাধানের সুযোগ হয়তো আর আসবে না। কারণ সরকারি প্রতিষ্ঠান আর তাদের মধ্যকার আমলাদের সমন্বয়ের অভাব চিরন্তন।”
এলাকাবাসী ও বিশিষ্টজনেরা মুহাম্মদ আবু আবিদ এর খোলা চিঠির পোস্টে সমর্থন জানিয়ে এলাকার দুরাবস্থার কথা কমেন্টে তুলে ধরেছেন। এছাড়াও এই খোলা চিঠির মাধ্যমে মুহাম্মদ আবু আবিদ নেটিজেনদেরও প্রশংসা পাচ্ছেন।