(ছবি: অনলাইন)
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে অবশেষে পদত্যাগ করলেন। আগের এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, দেশের স্বার্থে তিনি যে কোন প্রকার আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত আছেন। মাহিন্দা রাজাপাকসে’র পদত্যাগের বিষয়টি শ্রীলঙ্কান গণমাধ্যম ডেইলি মিরর অনলাইনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়।
ডেইলি মিররের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, কিছুক্ষণ আগেই শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করেছেন। দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভের ফলে আবারও কারফিউ জারি করা হয়। এমন ঘটনার মধ্যেই তার পদত্যাগের খবর সামনে এলো। শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোসহ অন্যান্য শহরে সরকারপন্থিদের সাথে সরকারবিরোধীদের সংঘর্ষ চলছে। সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দিন দিন জোরালো হওয়ায় রাজাপাকসে সরকারের শীর্ষ নেতাদের পদত্যাগের চাপ বাড়তে শুরু করে।
গত শুক্রবার (৬ মে) দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে সম্মতি জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে।
(ছবি: অনলাইন)
দেশটিতে অনেকদিন ধরেই অর্থনৈতিক সংকটসহ নানা সংকটে জর্জরিত হওয়ার কারণে বিক্ষোভ বেড়েই চলছে। এ কারণেই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশের সংকটময় অবস্থা থেকে বেড়িয়ে আসতে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের অনুরোধ করেছিলেন। পদত্যাগের চাপে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট নিজেও। কারণ শুরু থেকেই প্রেসিডেন্টকে তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করছে সাধারণ মানুষ।
প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রেসিডেন্টের অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দেন। প্রেসিডেন্ট হাউজে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করতে রাজি হন।
(ছবি: অনলাইন)
২০১৯ সালে সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। গোতাবায়া রাজাপাকসে নির্বাচনকে সামনে রেখে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করেন। তখনকার সরকার এ বিষয়টিকে নির্বাচনী কৌশল হিসেবেই ধরে নিয়েছিল।
মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ করাসহ অন্যান্য শুল্ক বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেছিলেন সে সময়কার অর্থমন্ত্রী মঙ্গলা সামারাবিরা।
ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে রাজাপাকসের পরিবার এখন অর্থনৈতিক সংকটের কারণে। মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, ভারত ও চীনসহ অন্যান্য দাতাদের কাছে ঋণের জন্য শরণাপন্ন হচ্ছেন। এরই মধ্যে ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে শ্রীলঙ্কা। ব্রিটিশদের কাছ থেকে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এটিই প্রথম ঘটনা। এছাড়া শ্রীলঙ্কার শেয়ারবাজারের অবস্থাও খুবই শোচনীয়।
শ্রীলঙ্কার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে বিগত ২০ বছরের মধ্যে ১২ বছরই ক্ষমতায় ছিলেন রাজাপাকসে পরিবারের সদস্যরা। এ কারণেই পরিবারটি স্বৈরতন্ত্রের তকমা পেয়েছেন। এর আগে দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। তাছাড়া দেশটির বন্দর ও কৃষি ব্যবস্থাও নিয়ন্ত্রণ করছেন তারই অন্য দুই ভাই। এভাবেই পাকসে পরিবারের ডজনখানেক সদস্য সরকারের সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
দৈনিক অন্যধারা/০৯ মে ২০২২/জ কা তা