অন্যধারা ডেস্ক:
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ২০১৬ সালের অক্টোবর ও পরের বছর ২৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর দেশটির সেনাবাহিনী যে হত্যা ও দমন-পীড়ন চালিয়েছে তাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির বর্তমান জো বাইডেন সরকারের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছেন। অচিরেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ওয়াশিংটনের ইউএস হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ব্লিংকেন দায়িত্ব নিয়ে মিয়ানমারের সহিংসতা নতুন করে পর্যালোচনার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার প্রায় ১৪ মাস পরে এ সিদ্ধান্ত আসছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের হলোকস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে বর্তমানে রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগ নিয়ে একটি প্রদর্শনী চলছে। মার্কিন কর্মকর্তারা রয়টার্সকে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে ব্লিংকেন তার নিজস্ব আইনি এবং বাস্তব ঘটনাভিত্তিক বিশ্লেষণের আদেশ দিয়েছিলেন। বিশ্লেষণটি এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী গণহত্যা করছে। ওয়াশিংটন মনে করে, এ আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত মিয়ানমারের বর্তমান জান্তা সরকারকে জবাবদিহিতে বাধ্য করতে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, এ সিদ্ধান্ত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জন্য আগামীতে অত্যাচার-অনাচার চালানো কঠিনতর করে তুলবে। মিয়ানমারের আন্দোলন কর্মীরাও বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপ দেশের ক্ষমতা দখলকারী জান্তার দায়বদ্ধতা নিশ্চিতের প্রচেষ্টায় সহায়তা করবে। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে গত রবিবার রয়টার্সের পক্ষ থেকে ওয়াশিংটনে মিয়ানমারের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের এবং জান্তার একজন মুখপাত্রকে মেইল পাঠায়। তবে তারা কেউই মেইলের জবাব দেননি।
সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের নামে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও বিতাড়ন চালায় মিয়ানমারের সেনারা। সে সময় সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। শুরু হয় একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকটের। জাতিসংঘ এরই মধ্যে ওই গণহত্যাকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযানের উৎকৃষ্ট পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। বর্তমানে এই গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।