গত দুদিন সারা দেশে রোগীদের এক অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অনেক অর্থ ব্যয় করে এবং অনেক কষ্ট করে জটিল রোগী নিয়ে রাজধানী বা অন্য বড় শহরে এসেছিলেন রোগীর স্বজনরা। কিন্তু চিকিৎসকরা এই দুদিন ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী না দেখায় এবং অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখায় অনেককে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে ফিরে যেতে হয়েছে। জানা যায়, ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর নবজাতক ও প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গত সোম ও মঙ্গলবার ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা ও অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় গাইনি চিকিৎসকদের সংগঠন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনিকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি)। তাদের এই কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে চিকিৎসকদের অন্য অনেক সংগঠন। এর ফলে সারা বাংলাদেশে ব্যক্তিগত চেম্বারে প্রায় সব ধরনের চিকিৎসাসেবা ও অস্ত্রোপচার বন্ধ থাকে। অবশ্য এ সময় সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম চালু থাকে। ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগে এ দেশে অতীতে এমন অনেক ঘটনাই ঘটেছে, যা ঘটা কোনোভাবেই কাম্য ছিল না। বহু জায়গায় চিকিৎসকদের ওপর হামলা হয়েছে। শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। ক্লিনিক বা হাসপাতালে ভাঙচুর করা হয়েছে। অতি মূল্যবান অনেক যন্ত্রপাতি নষ্ট করা হয়েছে।
দাবি বা প্রতিবাদ জানানোর অধিকার সব পেশাজীবীরই আছে। কিন্তু চিকিৎসাসেবা এমন একটি পেশা, যেখানে রোগাক্রান্ত মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন জড়িত। তাই চিকিৎসা পেশাজীবীদের অনেক বেশি দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে হয়। গ্রেপ্তার যেহেতু আইনি প্রক্রিয়ার অংশ, তাই এটিকে আইনি উপায়ে মোকাবেলা করাই শ্রেয়। প্রয়োজনে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে। আমরা আশা করি, সেবা কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ে এমন কোনো কর্মসূচিতে না গিয়ে তাঁরা প্রতিবাদ ও দাবি আদায়ের অন্যান্য কর্মসূচির আশ্রয় নেবেন।
অন্যধারা / ১৯-০৭-২০২৩