লাইফস্টাইল ডেস্ক
ফ্রিল্যান্সিং এর শুরুটাই সবচেয়ে কঠিন। অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে যখন এত আলোচনা চলছে এবং অনেকেই একে পেশা হিসেবে নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন তখন কোন বিষয়কে বেছে নেবেন সেটাও অনেকের কাছে বড় প্রশ্ন। অমুক ধরনের কাজে আয় বেশি, এধরনের তথ্য অনুসরন করে সেদিকে কাজের চেষ্টা করছেন। সফল না হয়ে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়কেই দোষারোপ করছেন।
অনলাইনে মূলত সবচাইতে বেশি কাজ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে যে সেক্টরগুলোতে সেগুলো হলো:
ওয়েব ডিজাইন।
গ্রাফিক ডিজাইন।
এস ই ও
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
ইমেইল মার্কেটিং
অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট:
ভিডিও এডিটিং।
আর্টিকেল রাইটিং
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট: আধুনিকযুগে প্রতিটা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। এছাড়া অনলাইনেই তৈরি হচ্ছে নিউজ পোর্টাল, টিভি, কমিউনিটি সাইট, ব্লগসহ আরো বিভিন্ন ধরনের সাইট। এক হিসেব অনুযায়ি সারাবিশ্বে প্রতি মিনিটে ৫৬২টি করে নতুন ওয়েবসাইট চালু হচ্ছে। এ তথ্যটি ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজের সম্ভাবনা বুঝতে সহজ করে দিবে আশা করছি।
মার্কেটপ্লেসগুলোতে ওয়েবডিজাইন সম্পর্কিত কাজগুলোর প্রতি ঘন্টার রেট গ্রাফিকস কিংবা এসইও সম্পর্কিত কাজের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে।
গ্রাফিক ডিজাইন: যে কোন কোম্পানীর লোগো, ব্রুশিয়ার থেকে শুরু করে অন্যান্য প্রিন্টিং জাতীয় সকল প্রোডাক্ট গ্রাফিক ডিজাইনাররা তৈরি করেন। আবার যে কোন ওয়েব ডিজাইনের শুরুতে কিংবা ভিডিও অ্যাডিটিংয়ের কাজে কিংবা অ্যানিমিশন প্রজেক্টের ক্ষেত্রেও গ্রাফিক ডিজাইনারদের প্রয়োজন। এমনকি এসইও প্রজেক্টের গ্রাফিক ডিজাইনারদের সাহায্য প্রয়োজন হয়। এটুকু তথ্যই গ্রাফিক ডিজাইনারদের চাহিদা কেমন বুঝার জন্য যথেষ্ট।
এসইও: বর্তমানে মানুষজন তাদের বেশির ভাগ প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো খুজে বের করার জন্য গুগলে সার্চ দেয়। গুগলের উপর নির্ভরশীলতা মানুষের দৈনন্দিন কাজকে আরও বেশি সহজ করে দিচ্ছে। যদি কোন কোম্পানী তার সার্ভিস কিংবা প্রোডাক্টকে সম্ভাব্য ভোক্তার সার্চের সময় চোখের সামনে নিয়ে আসতে পারে, তাহলে সেই সার্ভিসটি বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। আর এ কাজটিকেই বলে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, সংক্ষেপে এসইও। বর্তমানে অনলাইনে মানুষের নির্ভরশীলতা বেড়ে যাওয়ার কারনে সকল কোম্পানী তাদের সার্ভিসকে প্রচারের জন্য অনলাইনকেই সবচাইতে বেশি ব্যবহার করছে। আর সেজন্য যেকোন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িকভাবে উন্নতির জন্য এসইও এক্সপার্টদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এসইও এক্সাপার্টদের কাজের ক্ষেত্রগুলো সেজন্য অনেক বেশি।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: কোন প্রতিষ্ঠানের অনুমতি নিয়ে তাদের মার্কেটিং করে দিলে এবং সেক্ষেত্রে প্রতিটা প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিসের বিক্রির টাকা হতে একটা অংশ পেলে এ বিষয়টাকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলে। আন্তর্জাতিক বহু বড় বড় প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসাকে আরো বেশি বড় করার জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সিস্টেম চালু রেখেছে। বাংলাদেশে অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট, ক্লিক ব্যাংক অ্যাফিলিয়েট অনেক বেশি জনপ্রিয়।
ইমেইল মার্কেটিং: অনলাইনে মার্কেটিংয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম হচ্ছে ইমেইল মার্কেটিং। মার্কেট প্লেসে আয়, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে সফলতার জন্য, কিংবা নিজের বা অন্যের কোন ব্যবসার প্রমোশনের কাজের জন্য এটি শিখতে পারেন। কিংবা গ্রাফিক, ওয়েব ডিজাইনের কাজ যোগাড় করার জন্য ইমেইল মার্কেটিংয়ের জ্ঞানটি অনেক বেশি উপকারে আসবে।
অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট: যারা প্রোগ্রামিংয়ে মোটামুটি ধারণা আছে, তাদের জন্য আমার সবসময়ের পরামর্শ থাকে অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট শিখে নিন। স্মার্টফোনের ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে মানে অ্যাপস ডেভেলপারদের চাহিদাও বেড়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এ সেক্টরটির অনেক চাহিদা থাকবে। মার্কেটপ্লেসগুলোতে এ ধরনের কাজের প্রতিযোগীতা কম থাকে এবং কাজের প্রতি ঘন্টা রেটও অনেক বেশি হয়।
ভিডিও অ্যাডিটিং: যারা ভিডিও তৈরি কিংবা অ্যাডিটিং সম্পর্কিত কাজ জানেন, তারাও অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়ার দিকে এখন নজর দিতে পারে। কারণ এসইও, অ্যাডসেন্স ইনকাম কিংবা অ্যাফিলিয়েশনের আয়ের জন্য বর্তমানে ভিডিও অ্যাডিটিংয়ের কাজ জানা থাকলে অনেক ভাল হয়্। আর বর্তমানে একটা অংশ গুগলে কোন কিছু সার্চ না দিয়ে ইউটিউবেই সার্চ বেশি দেয়। ইউটিউবে সার্চ বৃদ্ধি পাচ্ছে মানে ভিডিও অ্যাডিটিংয়ের জ্ঞান এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
আর্টিকেল রাইটিং: ইংরেজি জ্ঞান ভাল থাকলে এবং লেখালেখির অভ্যাস থাকলে শুধুমাত্র আর্টিকেল রাইটার হিসেবেই অনলাইনে অনেক ব্যস্ত ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব। মার্কেটপ্লেসগুলো আর্টিকেল রাইটিং, রিরাইটিং সম্পর্কিত কাজগুলো অনেক বেশি থাকে। তাছাড়া এ অভ্যাসকে কাজে লাগিয়ে ব্লগিং করার মাধ্যমেও আয় করা যায়।
কিন্তু কেউ প্রতারনায় পা দেবেনা । কেউ সেমিনারে বলবে আসার জন্য ,সেমিনারে গিয়ে শুনবে কাজ শিখলেই টাকা আর টাকা ,কেউ কেউ এরকম হিসাব দেবে প্রতিদিন ৮ ঘন্টা কাজ করলেই ৩*৮=২৪ ও ২৪*৮৫=২০৪০ টাকা । মাস শেষে ২০৪০*৩০=৬১২০০ টাকা। এরকম হিসাব করে দেখাবে আগেই সর্তক থাকবেন । আপনি কাজ শিখতে হলে কারো কাছ থেকে হাতে কলমে শিখবেন। নিজে প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। অনেক প্রতারনায় শিকার হয়েছে।
উপরে মূলত প্রধান কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম। আরো অনেক কিছু শিখেও অনলাইনে ভাল ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব।
এ কাজগুলো জোগাড় করার জন্য বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস রয়েছে। তাছাড়া সোশ্যালমিডিয়াকে ব্যবহার করে, ব্লগিং করে কিংবা ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে অনেক বায়ার খুজে বের করা যায়।
অন্যধারা/ ২১ নভেম্বর ২০২১ইং/ এমকেএ