অন্যধারা ডেস্ক:
ভারতের মণিপুর রাজ্যের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাসভবনে এবার আগুন ধরিয়ে দিয়েছে হাজারো বিক্ষুব্ধ মানুষ। তাদের অনেকের হাতে ছিল পেট্রোল বোমা। চারদিক থেকে তারা ছুড়তে থাকে বোমা। তবে এ সময় বাড়িতে ছিলেন না মন্ত্রী আর কে রঞ্জন সিং।
এর মধ্যে দিয়ে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে চলমান সহিংসতা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। এর আগে মে মাসে রাজ্যের আরেক মন্ত্রীর বাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, কারফিউ উপেক্ষা করে প্রায় ১২০০ মানুষ মিছিল নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) রাজধানী ইম্ফালে রাতে মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অব্যাহত সহিংসতার মধ্যে মণিপুরে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আর কে রঞ্জন সিংয়ের বাড়িতে এক হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রমণ চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে ঘটনার সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তার ইম্ফলের বাড়িতে ছিলেন না বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এনডিটিভি বলছে, সহিংসতা রোধে ইম্ফলে কারফিউ জারি রয়েছে। তা সত্ত্বেও বিক্ষুব্ধ জনতা কংবায় মন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছাতে সক্ষম হয় এবং একপর্যায়ে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনার সময় মন্ত্রীর বাসভবনে নয়জন সিকিউরিটি এসকর্ট কর্মী, পাঁচজন সিকিউরিটি গার্ড এবং আটজন অতিরিক্ত গার্ড ছিলেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আর কে রঞ্জন সিংয়ের বাসভবনের একজন নিরাপত্তা কর্মী জানান, হামলার সময় জনতা চারদিক থেকে পেট্রোল বোমা ছুড়তে থাকে।
এসকর্ট কমান্ডার এল দীনেশ্বর সিং বলেছেন, ‘আমরা হামলার এই ঘটনাটি আটকাতে পারিনি। কারণ বিপুল সংখ্যক এই জনতা কার্যত অপ্রতিরোধ্য ছিল এবং আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারিনি। তারা চারদিক থেকে পেট্রোল বোমা ছুঁড়েছে.. বিল্ডিংয়ের পেছনের বাই লেন থেকে এবং এমনকি সামনের প্রবেশদ্বার থেকেও। আমরা মোটেই এই জনতাকে প্রতিরোধ করতে পারিনি।’
এসকর্ট কমান্ডার বলেন, প্রায় ১২০০ জনের বিশাল জনতা সেখানে এসে হামলা চালায়।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ভারতের কেন্দ্রীয় এই মন্ত্রীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটল। এর আগে গত মে মাসে প্রথমবার হামলার সময় মন্ত্রীর নিরাপত্তাকর্মীরা জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলি করে।
এছাড়া মণিপুরে নতুন করে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতার মধ্যে গত বুধবার রাতে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী নেমচা কিপজেনের বাসভবন আগুনে পুড়িয়ে দেয় জনতা। তিনি উত্তর-পূর্ব ভারতের ওই রাজ্যটির একমাত্র নারী মন্ত্রী। অবশ্য হামলার সময় নেমচা কিপজেনও তার বাড়িতে ছিলেন না বলে কর্মকর্তারা জানান।
জাতিগত সংঘর্ষের কারণে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যটিতে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। আর সর্বশেষ এই ঘটনা মণিপুর রাজ্যে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় বড় ধাক্কা হিসেবে মনে করা হচ্ছে। মূলত সংখ্যাগরিষ্ট মেইতেই এবং সংখ্যালঘিষ্ট কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত সংঘর্ষের কারণে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে রাজ্যটি অস্থিতিশীল রয়েছে।
সম্প্রতি ভারতের হাইকোর্ট মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিদের তালিকার অন্তর্ভূক্ত করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয়। হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। মেইতেই সম্প্রদায়ের সদস্যরা তফসিলি উপজাতিদের তালিকায় ঠাঁই পেলে রাজ্যে জমি কেনার অনুমতি পাবেন।
ডি.ও // র হ খ