সেঞ্চুরিয়নে ‘অলিখিত ফাইনাল’ জেতার আশায় টাইগাররা?

- Advertisement -
- Advertisement -

অন্যধারা ডেস্ক

বাংলাদেশের কাছে এতদিন দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশন ছিল দুর্জ্ঞেয়। সিরিজের প্রথম ওয়ানডে জিতে সেই কন্ডিশন জয়ের নতুন ইতিহাস গড়েছে টাইগাররা। দারুণ এই জয়ের আত্মবিশ্বাস সঙ্গী করে জোহানেসবার্গে নামলেও অনভিজ্ঞতায় ব্যর্থ হয়েছে লাল-সবুজ দল। প্রোটিয়ারা ম্যাচ জিতে সিরিজ সমতায় থাকায় সেঞ্চুরিয়নের তৃতীয় ম্যাচটি ‘অলিখিত ফাইনালে’ রূপ নিয়েছে। বুধবার ম্যাচটি যারাই জিতবে, ওয়ানডে সিরিজের ট্রফি তাদের ঘরেই যাবে। আর ম্যাচটি সেঞ্চুরিয়নে বলেই আশাবাদী বাংলাদেশ; স্বপ্ন দেখছে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম কোনও সিরিজ জয়ের।

কাজটা কঠিন হলেও মোটেও অসম্ভব নয়। তবে তাদের মতো অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে দক্ষিণ আফ্রিকাও। সেঞ্চুরিয়নে বুধবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টায় শুরু হবে ম্যাচটি। যা সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টেলিভিশন ও টি-স্পোর্টস। চলমান সিরিজ মিলিয়ে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে ৭৮টি। যার মধ্যে ২৯টিতে জয়ের ফুল ফুটিয়েছে। আজ আরেকটি সিরিজ জিতলে সাফল্যের মালায় যুক্ত হবে আরও একটি। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের সাফল্য অনেক হলেও দেশের বাইরে খুব বেশি নেই। ২৯ সিরিজ জয়ের তালিকার মধ্যে মাত্র ছয়টিতে দেশের বাইরে সিরিজ জিতেছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। দেশের বাইরে প্রথম সিরিজ জিতেছে সেই ২০০৬ সালে। কেনিয়াকে তাদের মাটিতে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছে হাবিবুল বাশারের দল। এর বাইরে জিম্বাবুয়েকে তিনবার ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দু’বার হারানোর কৃতিত্ব আছে। তবে এবার অন্যরকম এক ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে তামিমের দল। যেখানে কোনও ফরম্যাটেই জয়ের সুখস্মৃতি নেই, সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের হাতছানি। তাও আবার প্রথম ওয়ানডে জেতার ভেন্যু সেঞ্চুরিয়নে। এখন দেখার অপেক্ষা বাংলাদেশের জন্য এই ভেন্যু কতটুকু সৌভাগ্য বয়ে আনে।

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়ান্ডারার্সের অসমান বাউন্সের উইকেট একদম অপ্রত্যাশিত ছিল বাংলাদেশের কাছে। তামিম-মুশফিক-ইয়াসিররা শর্ট বলে অসমান বাউন্স খেলতে গিয়েই আউট হয়েছেন। এই অবস্থায় ব্যাটারদের শর্ট বলের দুর্বলতা আবারও প্রকট হয়ে ধরা দিলো। তবে মেহেদী হাসান মিরাজ সেটি মানতে নারাজ। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলে গেছেন, ‘শর্ট বল যেটা বললেন, পেছনের বল যদি অনেক ওপরে যায়, আরেকটা বল একই জায়গা থেকে যদি নেমে যায়, তাহলে ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন। শর্ট বলে আমাদের ব্যাটসম্যানরা অনেক দুর্বল, এটা বলবো না। আমরা তো প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরিয়নে অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছি। রাব্বি অনেক মেরেছে, সাকিব ভাই মেরেছে। সবাই ভালো খেলেছে। উইকেট যদি সমান বাউন্সের থাকে, তাহলে কিন্তু শর্ট বল সহজ হয়ে যায়। যদি একই লেংথ থেকে আপ-ডাউন হয়, তখন কিন্তু কঠিন হয়ে ওঠে।’

জোহানেসবার্গের উইকেটে বল ওঠা-নামা করায় বাড়তি সতর্ক থাকতে হয়েছিল ব্যাটারদের। উইকেটের এমন অস্বাভাবিক আচরণে নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে সেঞ্চুরিয়নের উইকেট ব্যাটিং করার জন্য অনেক ভালো। আর সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটি সেঞ্চুরিয়নে বলেই আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ। মিরাজ বলে গেছেন, ‘প্রথম ম্যাচে আমরা জিতেছি, খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছি। দ্বিতীয় ম্যাচে আমরা সবাই দেখেছি, উইকেটের আচরণ ওইরকম ছিল না। উইকেট ভালো থাকলে হয়তো আরও ভালো ক্রিকেট খেলতে পারতাম। এখনও সুযোগ আছে সিরিজ জেতার। এখানকার (সেঞ্চুরিয়ন) উইকেট খুবই ভালো। আমরা যেহেতু প্রথম ম্যাচ খেলেছি, উইকেট ভালো থাকে এখানে, আত্মবিশ্বাসও আছে যে তিনশ’র বেশি রান করেছি এই মাঠে। আমরা যেরকম দলীয় খেলা খেলি, তেমন খেলতে পারলে জেতা কঠিন কিছু নয়।’

তৃতীয় ম্যাচের আগের দিন কঠোর অনুশীলন করেছে গোটা দল। তামিম ইকবালদের লক্ষ্য একটাই আরও একবার প্রোটিয়া কন্ডিশন জয় করে ইতিহাস রচনা করা। বাংলাদেশের জন্য কিছুটা চিন্তার কারণ দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের ব্যর্থতা। তামিম ইকবাল দ্বিতীয় ম্যাচে রান পাননি। মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ এখনও বড় কোনও অবদান রাখতে পারেননি দলের জন্য। সাকিব আল হাসান প্রথম ম্যাচে সেরা পারফরম্যান্স করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিংটা ভালো করতে পারেননি। এর মধ্যে মানসিক ভাবে কিছুটা হলেও বিধ্বস্ত। কেননা তার পরিবারের ৫ সদস্য হাসপাতালে ভর্তি। এমন অবস্থায় মাঠের লড়াইয়ে সর্বোচ্চটা দেওয়া বেশ কঠিনই তার জন্য। তবু সাকিব মনের ভেতরকার ঝড়টা কাউকে বুঝতে দিচ্ছেন না। এখন সবকিছু ভুলে দলের গুরুত্বপূর্ণ চার ব্যাটার রান পেলেই সেঞ্চুরিয়নে ইতিহাস গড়া সম্ভব। সতীর্থরাও খুব করে চাইবেন, সাকিবের জন্য হলেও ম্যাচটি জিতে আনন্দদায়ী এক পরিবেশ উপহার দিতে!

দৈনিক অন্যধারা/এইচ

- Advertisement -

আরো পড়ুুর