অন্যধারা ডেস্ক
শরীয়তপুর সদর উপজেলায় স্কুলে গিয়ে সবার সামনে প্রেমিকের মা অপমান করায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এক ছাত্রী।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রুদ্রকর ইউনিয়নের সোনামুখী গ্রামের এক ছেলে এবং ওই মেয়ে স্থানীয় সুবচনী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। একই বিদ্যালয়ে পড়ার সুবাদে এক বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে জানান। বিষয়টি জানাজানি হলে কিছুদিন আগে ছেলেটিকে তার পরিবার ঢাকা নিয়ে যায়। কিন্তু এরপরও তাদের যোগাযোগ চলতে থাকে।
প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার সকালে মেয়েটি স্কুলে যায়। ছেলের মা ও বড় ভাই হঠাৎ স্কুলে গিয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের সামনে তাকে গালাগালি শুরু করেন। জুতোপেটাও করেন। এক পর্যায়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন তাঁর দপ্তরিকে দিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেন। দুপুরের দিকে স্কুলছাত্রী ঘরের একটি কক্ষ বন্ধ করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
সুবচনী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে আমি জানতাম না। তবে মেয়েটির শরীর অসুস্থ বললে, তাকে আমি দপ্তরি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেই। পরে শুনি আত্মহত্যা করেছে। এমন হবে ভাবতেই পারিনি।’
স্কুলছাত্রীর মা বলেন, ‘স্কুলের অন্য শিক্ষার্থীদের সামনে ওই ছেলের মা ও ভাই আমার মেয়েকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। আবার জুতা দিয়ে পিটিয়েছে তারা। মেয়ে অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। তাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করানো হয়েছে।’
ঘটনার পর ছেলের মা ও ভাইসহ বাড়ির সবাই ঘা ঢাকা দিয়েছেন। তাই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
রুদ্রকর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ঢালী বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে আমার কাছে দুই পরিবারের কেউ আসেনি। আমি চাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
শরীয়তপুর সদরের পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনায় মামলা হচ্ছে। তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
দৈনিক অন্যধারা/ এইচ

