আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি সন্তান নেয়ার জন্য দম্পতিদের অর্থ সহায়তা দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার। গত বছর থেকে সন্তান নিলে সরকারের কাছ থেকে এককালীন ১ হাজার ৫১০ ডলার পান দক্ষিণ কোরীয় বাবা মায়েরা। লালনপালনের জন্য নবজাতকের বয়স এক বছর হওয়ার আগপর্যন্ত প্রতি মাসে ৫২৮ ডলার করে দেওয়া হয়। আর সন্তানের বয়স এক থেকে দুই বছরের মধ্যে হলে দেওয়া হয় মাসে ২৬৪ ডলার। ২০২৪ সাল থেকে মাসিক সহায়তার এই পরিমাণ বেড়ে যথাক্রমে ৭৫৫ ডলার ও ৩৭৭ ডলার হবে।
এছাড়াও সন্তানের স্কুলে যাওয়ার বয়স হওয়ার আগপর্যন্ত মাসে ১৫১ ডলার করে সহায়তা দেয় দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। পাশাপাশি আনুষঙ্গিক সহায়তাও পান নিম্ন আয়ের পরিবার ও একাকী বাবা–মায়েরা। সন্তানসম্ভবা নারী ও নবজাতককে দেওয়া হয় চিকিৎসা সহায়তা। নবজাতকের জন্য রয়েছে বিনা মূল্যের বেবি সিটিং সেবা। স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক সন্তান নেওয়ার জন্য দম্পতিদের বাড়তি সুবিধা ও সহায়তা দেয়া হয় দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা বুসানে। বুসানের কোনো নারী তৃতীয় বা এরও বেশি সন্তানের জন্ম দিলে ৭ হাজার ৫৫২ ডলার বোনাস পান। এর আগে ৩৭৭ ডলার ছিল এ সহায়তার পরিমাণ।
একই সুবিধা রয়েছে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেওলা প্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকায়ও। এখানে একটি সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য মা-বাবাকে প্রতি মাসে ৪৫৩ ডলার দেওয়া হয়। সন্তানের বয়স সাত বছর হওয়া পর্যন্ত সহায়তা দেওয়া অব্যাহত থাকে। বিশ্বে সবচেয়ে কম জন্মহারের দেশগুলোর একটি দক্ষিণ কোরিয়া। তাই সন্তান জন্ম দেওয়ার বিনিময়ে বিপুল পরিমাণে সরকারি সহায়তা দেওয়ার বড় কারণ নিম্ন জন্মহার। গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ার নারীদের মধ্যে সন্তান জন্মদানের গড় হার শূন্য দশমিক ৭৮ শতাংশে নেমে এসেছে।
শহুরে ছোট পরিবারের বিকাশ, বাড়তি খরচ ও ঝামেলা, পেশাজীবনকে বেশি প্রাধান্য দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে সন্তান নিতে চান না দক্ষিণ কোরিয়ার দম্পতিরা। এই অনীহা দক্ষিণ কোরিয়ার জনসংখ্যার বিন্যাসকে পাল্টে ফেলছে, যা অর্থনৈতিক সংকটের মুখে ফেলতে পারে দেশটিকে। এমন বাস্তবতায় দম্পতিদের সন্তান জন্মদানের আগ্রহকে উসকে দিতে বিশেষ ভাতাসহ নানা ধরনের আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সরকার।
দৈনিক অন্যধারা / ১২-০৪-২০২৩