অন্যধারা ডেস্ক :
কোনো ব্যক্তিকে লিঙ্গ পরিচয় কিংবা যৌনতার ভিত্তিতে বিচার করা ঠিক নয়। পৃথিবীতে আপনি যা করেন তা আপনার পরিচয়, আপনি বিছানায় যা করেন তা নয়। যারা এভাবে বিচার করে তাদের দৌড় বেশিদূর নয়; এমনটাই মনে করেন বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত।
পুরুষ কিংবা নারী এই বিষয়টি দিয়েই যারা নিজের পরিচিতি দেন, নিজেকে এভাবেই জাহির করেন, তাদের বিরুদ্ধেও সরব কঙ্গনা। তার সাফ কথা, তাকেও কেউ শুধু নারী হিসাবে পরিচয় দিক, এটা তার একদমই পছন্দ নয়।
এ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ভারতে যখন সমকামী বিয়ে নিয়ে চারিদিকে আলোচনা চলছে এবং সুপ্রিম কোর্টে সমকামী বিয়ের বৈধতা সংক্রান্ত মামলা চলছে তখন টুইটারে নিজের মতামত প্রকাশ করলেন অভিনেত্রী।
শুক্রবার টুইটারে কঙ্গনা লেখেন, ‘আপনি পুরুষ/নারী/ অন্য কিছু, যাই হোন না কেন আপনার লিঙ্গ পরিচয়, আপনার নিজের কাছে ছাড়া অন্য কারোও জন্য কোনো প্রভাব ফেলবে না। দয়া করে সেটা বুঝুন। আধুনিক বিশ্বে আমরা অভিনেত্রী বা নারী পরিচালক-এর মতো শব্দও ব্যবহার করি না। আমরা শুধুই অভিনেতা কিংবা পরিচালক বলি। পৃথিবীতে আপনি যা করেন তা আপনার পরিচয়, আপনি বিছানায় যা করেন তা নয়। আপনার যৌন পছন্দ যাই হোক, সেগুলো না হয় আপনার বিছানাতেই থাক।
‘সেটাকে আপনার পরিচয়পত্র বা পদক বানাবেন না। এটাকে তো সর্বত্র জাহির করার দরকার নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আপনার লিঙ্গের সঙ্গে সহমত নয়, এমন লোকজনের গলা কাটার জন্য ছুরি নিয়ে ঘোরাফেরা করবেন না। আমি আবারও বলছি আপনার লিঙ্গ আপনার পরিচয় নয়, এভাবে তৈরি করবেন না। আমি গ্রামীণ এলাকা থেকে উঠে আসা একজন নারী, কিন্তু এই বিশ্ব আমায় অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক এবং লেখক হিসাবে নিজের জায়গা তৈরি করতে কোনোও আলাদা সুবিধা দেয়নি।’
অভিনেত্রী আরও লেখেন, ‘কখনও মানুষকে লিঙ্গ বা অন্য কোনো শারীরিক বৈশিষ্ট্যের লেন্স থেকে দেখবেন না। যারা কঙ্গনাকে শুধু একজন নারী ভেবেছিলেন তাদের কী হয়েছিল জানেন! ওরা অবাক হয়েছিলেন, কারণ আমি তা নই। আমি নিজেকে বা অন্য কাউকেই লিঙ্গের ভিত্তিতে বিচার করি না। আমি সবসময় অনেক লোক নিয়ে একটা ঘরে থাকি, সেখানে পুরুষ/নারী/হোমো/হেট্রো/ শারীরিকভাবে শক্তিশালী বা দুর্বল, নাহ এভাবে বিচার হয় না!
‘আমি এতদূর আসতে পারতাম না যদি আমি আমার চারপাশের সবাইকে এবং নিজেকে এমন অনেক স্তরে বিচার করতাম। কেন আপনারা সবাই চারপাশের মানুষের শারীরিক বৈশিষ্টে জন্য এত সময় নষ্ট করেন! অনুগ্রহ করে বুঝুন। এমন সমীত দৃষ্টিভঙ্গিতে ভাবলে আপনি খুব বেশিদূর এগোতে পারবেন না। যারা অন্যদের এভাবে বিচার করেন তারা কখনওই নিজের বিচার করতে পারেন না। তাই নিজেকে লিঙ্গ বা অন্য কোনো সীমাবদ্ধ উপলব্ধি থেকে মুক্ত করুন। জেগে উঠুন এবং নিজেকে উজ্জ্বল করে তুলুন। ধর্ম বলে নিজের মধ্যেই ঈশ্বর রয়েছেন, সেখানে পৌঁছোন। শুভেচ্ছা রইল।’
খ,র