অন্যধারা ডেস্ক:
বাংলাদেশের রিজার্ভ ফাণ্ড নিয়ে ক্রমেই উদ্বেগ বাড়ছে। এক বছর আগে এই সময়ে আট মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা থাকলেও তা এখন আর নেই। এখন তা কেবল ৪ মাসে নেমে গেছে। রিজার্ভ শেষ হচ্ছে মূলত আমদানি ব্যয় মেটাতেই। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখনই সতর্ক না হলে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়ে কঠিন অবস্থায় পড়বে বাংলাদেশ।
বর্তমানে ৩৯ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা কাগজে-কলমে বাংলাদেশ ব্যাংকে মজুদ রয়েছে। তবে এ নিয়েও বিতর্ক আছে। মাত্র ৩২ বিলিয়ন ডলার প্রকৃত রিজার্ভ আছে। যুক্তি দিয়ে বলা হচ্ছে, রফতানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) এবং সবুজ রূপান্তর তহবিল (জিটিএফ) ও শ্রীলঙ্কার ঋণ বাবদ ৭ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে প্রকৃতপক্ষে ৩২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থাকে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই ৩২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে কত মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে?
অর্থনীতিবিদরা বলেন, গত বছর আমাদের রিজার্ভ ছিল মাত্র ৮ মাসের। কিন্তু বর্তমান হিসেব মতে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জটিল পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হবে আমাদেরকে। যেটিকে ধরা হয় তিন মাস। সরকার রিজার্ভের অর্থ ব্যবহার কমাতে নানামুখী পদক্ষেপ নিলেও আসলেই কি তার সুফল মিলছে? বিশ্লেষকরা বলছেন, এক্ষেত্রে এখনও কঠোর হওয়ার সুযোগ আছে। যারা পেনসন নিয়ে অবসরে চলে যাচ্ছেন তাদের যেতে দিন, এক্সটেনশন দিবেন না। বাংলাদেশে এমন কিছু মন্ত্রণালয় আছে, যেগুলো না থাকলেও দেশ সুন্দরভাবে চলবে। বর্তমানে দেশে পাট মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজন নেই। আমরা এমন কোনো পাট রফতারি করি না, যার জন্য একটি মন্ত্রণালয় চালু রাখতে হবে। এছাড়াও প্রশ্ন তোলা হয় বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও।
দেশে রেমিটেন্সই হচ্ছে রিজার্ভকে সমৃদ্ধ করার প্রধান উৎস। বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থ প্রবাহ বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বাড়ে। অন্যদিকে রফতানি আয়েও যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। তাই রেমিটেন্সের দিকে আরও বেশি গুরুত্ব দেয়ার জন্য পরামর্শ দেন বিশ্লেষকরা।
এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ব্যয় সংকোচনের পথে হাঁটছে সরকার। কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ায় সঙ্কটের সৃষ্টি হবে না। তুন নতুন শ্রমিক আমরা বাইরে পাঠাচ্ছি। ছাড়া রফতানিও খুব ভালো হয়েছে। তাই দ্রুত আমরা কোনো সঙ্কটে পড়বো বলে আমি মনে করি না।
আমদানি ব্যয় হু হু করে বাড়ছে বিশ্ব বাজারে পণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে। রিজার্ভ ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নানামুখী সংস্কার এনেছে মুদ্রা ব্যবস্থাপনায়।
দৈনিক অন্যধারা/১৮ জুলাই ২০২২/ জ কা তা